Abu Anas
আখেরী মোনাজাতে বেগানা মহিলা,
অলীপুরীকে আজ খুব মনে পড়ছে...
=========================
১১ টায় মুনাজাত শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু আগেই শুরু হয়ে গেলো। সমুদ্রের স্রোতের মতো মানুষ। প্রচন্ড ভীড়, মাইকে বলা হচ্ছে যে যেখানে আছেন সেখানে বসে পড়ুন!
.
রাস্তার মধ্যেই বসে পড়তে শুরু করে দিয়েছে অধিকাংশ মানুষ। তবে কেউ কেউ এখনও দাড়িয়ে রয়েছে। ইচ্ছা আরও একটু সামনে এগুবে তারা। তাদের মাঝে ছিলো কিছু বেগানা মহিলাও। তারা বিপদে পড়ে গেলো। কি করবে তারা এখন? তাদের কেউ কেউ পুরুষদের মাঝেই একটু যায়গা করে নিয়ে রাস্তার মাঝেই বসে পড়লো। কিছু মহিলা পুরুষের ভীড় ঠেলে আরও সামনে এগিয়ে যেতে থাকলো। তারা আর কত সামনে যেতে চায়, কে জানে?
.
আমিও ভীড়ের মাঝে আটকে গেলাম।হঠাৎ আটকে যাওয়া সবাই যে যেখানে আছে বসে পড়তে শুরু করলো।
.
সর্বনাশ!
এখন যদি এদের সাথে বসে পড়ি তবে এই বিদ’আতী আখেরী মুনাজাতে হাত না তুলে কতক্ষন বসে থাকবো? না, তা হতে দেওয়া যায় না। তাই কষ্টকর হলেও সেই ভীড় ঠেলেই একটু কায়দা করে উল্টো দিকে ফিরে আসা শুরু করলাম।
.
ইতোমধ্যে মুনাজাত শুরু হয়ে গিয়েছে। মাতৃভাষায় আখেরী মুনাজাত! উর্দূ ভাষাকে হটাতে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের কথা মনে পড়তে থাকলো খুব...!
.
রাস্তার দু’পাশে প্রায় সবাই দু’হাত তুলে মুনাজাতরত আবস্থায় বসে রয়েছে। কেউ কেউ হাটতে হাটতেই মুনাজাত দিচ্ছে। ট্যাক্সি, প্রাইভেট কারের ড্রাইভারও গাড়ি থামিয়ে মুনাজাত দিচ্ছে। রাস্তার মোড়ের ট্রাফিকগুলোও বসে নেই। তারাও হাত তুলে আমিন, আমিন বলছে।
.
সিগারেট ফুঁকতে থাকা এক ছোকরাকে দেখলাম একজন মুরুব্বীর পাশে বসে পড়ে দু’হাত তুলে ধরলো আল্লাহর পানে। হাত তোলার আগ মুহুর্তে হাতের সিগারেটটি ফেলে দিলো। সকালে এই ছোকরার মতো ৩ ছোকরাকে দেখেছিলাম সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে ইস্তেমার মাঠের দিকে যাচ্ছে।এরা আজকের ফজরের সালাত পড়েছিলো কিনা আল্লাহ ভাল জানেন!
.
এদের দেখলেই বুঝতে পারি মানুষ এখন ফরয সালাত আদায়ের চাইতে আখেরী মুনাজাতে যোগদান করাকেই অধিক গুরুত্ব দেয়। আখেরী মুনাজাতে শরীক হবার জন্য নামাজী, বে-নামাজী, ঘুষখোর, সন্ত্রাসী, বিদ‘আতী, দুস্কৃতিকারী দলে দলে ময়দানের দিকে ধাবিত হয়!ভাবখানা এমন যে, আমরা নামাজ পড়িনা তাতে কি? মুনাজাততো ধরেছি। সব পাপ ধুয়ে মুছে যাবে…!
.
বাসার কাছাকাছি এসে পড়েছি। হঠাৎ দেখি সামনের রাস্তা প্রায় ব্লক। কাছে এগিয়ে আসতেই বুঝলাম এদের অধিকাংশই মহিলা, কিছু পুরুষ। এতদূর পরও এরা এখানে কেন? এস্তোমার মাঠের কাছে ভীড়ের কারনে পুরুষদের মাঝে মহিলাদের বসে পড়া ছিলো অগ্যতার গতি, কিন্তু এখানে কেন এক সাথে সবার বসতে হলো? রাস্তার পাশে গাছের উপর বড় একটি মাইক লাগানো দেখে বুঝলাম পরিষ্কার আওয়াজের কারনে এরা সবাই এখানে একত্রিত হয়েছে।
.
মহিলারা যে সবাই বেগানা, তা বলছি না। কারণ অনেকের গায়ে বোরকা রয়েছে। তবে অধিকাংশ মহিলাই বোরকাবিহীন,খালেদা জিয়ার স্টাইলে মাথায় একটু ওড়না/চাঁদর পেচিয়ে নিয়েছে।
.
এখানকার পর্দানশীল ও বেগানা মহিলাদের দেখে অলীপুরীকে খুব মনে পড়ছে। কি এমন ফজিলত এই আখেরী মোনাজাতে যে ভীড় ঠেলেও মহিলাদের এই মোনাজাতে উপস্থিত হতে হবে? মাসজিদে মহিলাদের সালাত আদায় করা নয়া এক ফ্যাশন,নয়া এক ফিৎনা দাবী করা অলীপুরীকে আজ খুব মনে পড়ছে !
.
ও অলীপুরী হুজুর,..
ও টঙ্গী মাঠের হুজুর...
আখেরী মুনাজাতে মহিলা নট এলাউড...
এভাবে বলতে পারেন না?
রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৮
আখেরী মোনাজাতে বেগানা মহিলা, অলীপুরীকে আজ খুব মনে পড়ছে
লেবেলসমূহ:
চিল্লা,
বেদাতি আখেরি মোনাজাত,
হিন্দী ইলিয়াসী তাবলীগ
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন