সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬

মা

بسم الله الرحمن الرحيم "মা" কুরআনের ভাষায় - ووصينا الانسان بوالديه احسانا )আনকাবূত -৮( "মা" কথাটি হৃদয়বীণার সবগুলো তারে টোকা দেয়ার সামর্থ্য রাখে।"মা" যিনি হৃদয়ের গভীরের সর্বোচ্চ স্রোত।একটি শর্তহীন ভালবাসার নাম। "মা" হচ্ছেন একজন পূর্ণাঙ্গ নারী,যিনি গর্ভধারণ,সন্তানের জন্ম,সন্তানকে লালন-পালন,উত্তমচরিত্র গঠন,সর্বোপরি অভিভাবকের ভূমিকা পালনে সক্ষম। "মা" এমন একটি শব্দ,যে শব্দটি এক সর্গীয় পূণ্যতায় হৃদয়-মনকে অমিয় সুধায় প্লাবিত করে।বাংলা ভাষায় প্রথম শব্দ "ওম"।যার প্রচলিত রুপ "মা"।'ম' ধ্বনিটি সবচেয়ে সহজবোধ্য।পৃথিবীতে যতগুলো প্রসিদ্ধ ভাষা রয়েছে প্রায় সব ভাষায় 'ম' ধ্বনিটি বিদ্যমান।যেমন- ইংরেজীতে Mother, আরবীতে উম্মুন,হিন্দী আম্মা,উর্দূ আম্মি ইত্যাদি। "মা"যদি কল্যাণকামী না হতেন তবে মানবসভ্যতার চাকা শ্লথ হয়ে যেতো।সন্তানের প্রতি মায়ের এই তীব্র মমতার ব্যাখ্যায় বিজ্ঞান বলে, মায়ের দুধে এক প্রকার রাসায়নিক যৌগিক পদার্থ আছে,যা সন্তানের দেহে প্রবেশ করলে মা ও সন্তানের মধ্যে সৌহার্দ্যের নিবিড় বন্ধন সৃস্টি হয়।মায়ের ভালবাসার ক্ষমতা বিজ্ঞানের মাপকাঠিতে নির্ণয় সম্ভব নয়।ইসলাম ধর্মে মাকে দেয়া হয়েছে অতুলনীয় মর্য্দা।হযরত আসমা বিনতে আবু বকর )রা.( থেকে বর্ণিত,বুখারী শরীফে সংকলিত হাদীসে "মা" মুশরিকা হলেও তাঁর সাথে ভালো ব্যাবহার করতে রাসূল )স.( নির্দেশ দিয়েছেন। মাকে শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানানোর নির্দিষ্ট কোনো দিন নেই।মায়ের প্রতি ভালবাসা সর্বমুহূর্তের।তবুও মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার "মা" দিবস পালিত হয়ে আসছে।আবু হুরায়রা )রা.( থেকে বর্ণিত বুখারী শরীফে চয়িত আনুগত্য বেশি পাওয়ার হকদার হিসেবে ক্রমান্বয়ে তিনবার রাসূল )স.( মা'র কথা বলেছেন।"মা" ছোট্ট শিশুর প্রথম ভালবাসা।মায়ের গর্ভ থেকে শুরু করে জন্মের পরেও তিল তিল করে নাড়িছেড়া ধনকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন "মা"। মায়ের হৃদয়ের প্রবাহমান রক্তকণিকায় রয়েছে সন্তানের জন্য ভালবাসা।"মা" মা-ই,তাঁর কোনো ভিন্নরুপ নেই - জন গে। প্রেসিডেন্ট,উচ্চপদস্­থ কর্মকর্তা,ডাক্তার,ইঞ­্জিনিয়ারবা নিচুতলার যে কেউ থাকুক সন্তানের কাছে তাঁর পরিচয় তিনি গর্ভধারিণী "মা"।নবী করীম )স.( ফাতেমা )রা.( কে মা বলে ডাকতেন এবং পরম শ্রদ্ধায় দুধ মা হালিমাকে চাদর বিছিয়ে দিতেন।একমাত্র মায়ের জন্যই অসুবিধার সম্মুখীন হলে ইসলাম নামাজ ত্যাগ করার অনুমতি দিয়েছে।মা'র দিকে অনুগ্রহের নজরে তাকালে প্রতিটি দৃস্টির বিনিময়ে কবুল হজ্বের সওয়াব পাওয়া যায়।একজন মা-ই তাঁর সন্তানের পক্ষ থেকে উত্তম আচরণ, সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য। "This person is never poor,who has mother" - আব্রাহাম লিংকন। এছাড়া মা সম্পর্কে নেপোলিয়ন এর বিখ্যাত উক্তি রয়েছে।প্রাণের প্রথম স্পন্দন থেকেই সন্তানের সঙ্গে মায়ের দেহ-মন-প্রাণ-আবেগ, অনুভূতির সম্পর্ক একসূত্রে গ্রথিত হয়ে যায়।সন্তানের জন্য মায়ের আশীর্বাদের স্নেহঝর্ণা প্রবাহিত হতেই থাকে। বর্তমান সমাজে সন্তান দ্বারা মা নির্যাতন,হত্যারমত লোমহর্ষক ঘটনা ও বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধি ঘটছে।মায়ের প্রতি সঠিক হক আদায় মায়ের অধিকার নিশ্চিতকরণে আশাতীত সুফল বয়ে আনতে পারে।আল্লাহর বাণী- واخفض لهما خناح الذل من الرحمة وقل رب ارحمهما كما ربياني صغيرا বনী ইসরাইল-২৪ আল্লাহ তায়ালা আরো বলেছেন- মায়ের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে সন্তান যেন "উহ" শব্দটিও না বলে। মনের মাঝে সর্বোচ্চ আসনটি মায়ের জন্য বরাদ্দ রাখা এবং বার্ধক্যের একাকীত্বে সন্তানেরই উচিত মাকে সঙ্গ দেয়া।সর্বদা তাঁর খেদমতে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে।কবির ভাষায়- "মায়ের আঁচল নিয়ে তোমরা যারা আছো মা'র স্নেহের ছায়ায় বুঝবে কি করে বলো মা ছাড়া এ জীবন কত অসহায়,,,,,,,

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন