সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭

“তাহতাস সুররাহ” সমাচার লুৎফর রহমান ফরাজী

Somun Khan  bhai theke

★ মামা আর ভাগ্নের কথোপকথনে “তাহতাস সুররাহ” সমাচার ★ 😆
ভাগ্নে! লুৎফর রহমান ফরায়েজী সাহেব তার বক্তব্যে (লিংকঃ https://youtu.be/tncO1w1VkAI) বলেন, নাভীর নিচে হাত বাঁধার ক্ষেত্রে তাদের প্রথম দলীল হল আওয়ামা কর্তৃক তাহক্বীক্বকৃত “মুসান্নাফে ইবনু আবী শায়বাহ” এটা সৌদি থেকে প্রকাশিত। আবু বকর ইবনু আবী শায়বাহ ইমাম বুখারীর উস্তাদও। সেই কিতাবের ৩৯৫৯নং হাদীছ। যা নিম্নরূপঃ
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَضَعَ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلَاةِ تحت السرة »
আলক্বামা বিন ওয়াইল বিন হুজর তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাতে তার বাম হাতের উপর ডান হাত নাভীর নিচে রাখতে দেখেছি।
মুসান্নাফে ইবনু আবী শায়বাহ, তাহক্বীক্ব আওয়ামা, হা/৩৯৫৯। আওয়ামা আল হানাফী হাদীছটির সানাদ সহীহ বলেছেন।
বুঝলাম! মামু। ঘাপলাটার কথা জানেন তো?
কি ঘাপলা ভাগ্নে?
ঐ হাদীছটিই শামেলাহ থেকে পড়ুনঃ
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَضَعَ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلَاةِ»
মুসান্নাফে ইবনু আবী শায়বাহ, (শামেলাহ) হা/৩৯৩৮
এখানে “তাহতাস সুর্রাহ” বা নাভীর নিচে শব্দ নেই।
শাইখ আবূ মুহাম্মাদ উসামা এর নুসখা থেকে পড়ুনঃ
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَضَعَ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلَاةِ»
মুসান্নাফে ইবনু আবী শায়বাহ, তাহক্বীক্ব উসামা, হা/৩৯৬২
এখানেও “তাহতাস সুর্রাহ” বা নাভীর নিচে শব্দ নেই।
শাইখ উসামা হাদীছটিকে মুরসাল বলেছেন।
সন্দেহ! সন্দেহ!! সন্দেহ!!!
তাহলে মনে হয় অন্য জায়গায় আছে ভাগ্নে!!! অন্য ইমামরা কি এই সানাদে হাদীছ আনেন নি? সেখানে থাকলে তো আর সন্দেহ থাকে না যে এটা সংযোজিত শব্দ কি না?
আচ্ছা মামা! চলুন দেখি হুবহু সানাদে অন্য ইমামরা কি “তাহতাস সুর্রাহ” এর সন্ধান আমাদের দিয়েছেন কি না?
(০১) হুবহু সানাদে হাদীছটি রয়েছে মুসনাদে আহমাদে।
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُمَيْرٍ الْعَنْبَرِيُّ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ الْحَضْرَمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: " رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاضِعًا يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلَاةِ "
মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩১৬; (আরনাউত্ব) হা/১৮৮৪৬
শাইখ আরনাউত্ব ইসনাদুহু সহীহ বলেছেন।
পাওয়া গেল না। “তাহতাস সুর্রাহ” পাওয়া গেল না।
(০২) আরো পড়ুন শারহুস সুন্নাহ থেকে,
أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الصَّالِحِيُّ، أَخْبَرَنَا أَبُو بَكْرٍ أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ الْحِيرِيُّ، أَنَا حَاجِبُ بْنُ أَحْمَدَ الطُّوسِيُّ، نَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمٍ، نَا وَكِيعٌ، نَا مُوسَى بْنُ عُمَيْرٍ الْعَنْبَرِيُّ، ٢٥ عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ الْحَضْرَمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاضِعًا يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلاةِ»
শারহুস সুন্নাহ লিল বাগাওয়ী, (শামেলাহ), হা/৫৬৯
হায়! হায়!!
“তাহতাস সুর্রাহ” এর খবর নেই। এ কি কথা!!!
(৩) আরো পড়ুন সুনানে দারাকুতনী থেকে,
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ , وَعُثْمَانُ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْأَحْوَلُ , قَالَا: نا يُوسُفُ بْنُ مُوسَى , نا وَكِيعٌ , نا مُوسَى بْنُ عُمَيْرٍ الْعَنْبَرِيُّ , عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ الْحَضْرَمِيِّ , عَنْ أَبِيهِ , قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاضِعًا يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلَاةِ»
সুনানে দারাকুতনী, (শামেলাহ) হা/১১০১; (ই.ফা.বা.) হা/১০৭৪
সুবহানআল্লাহ!!!
“তাহতাস সুর্রাহ” তথা নাভীর নিচে কথাটা এখানেও নেই।
আচ্ছা! আর কোথাও কি খোঁজ লাগানো যায়?
আলকামা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছে এরকম আরেকটা বর্ণনা আছে। সেটা ইমাম ওয়াকী এর স্থলে ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাকের বর্ণনা। সেটা পড়বেন নাকি?
পড়ে দেখি!!! যদি পাইয়া যাই!!!
ওকে। পড়ুনঃ
(৪) সুনানে দারাকুতনী থেকেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَكَرِيَّا , وَالْحَسَنُ بْنُ الْخَضِرِ , قَالَا: نا أَحْمَدُ بْنُ شُعَيْبٍ , ثنا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ , ثنا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُمَيْرٍ الْعَنْبَرِيِّ , وَقَيْسُ بْنُ سُلَيْمٍ , قَالَا: نا عَلْقَمَةُ بْنُ وَائِلٍ , عَنْ أَبِيهِ , قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ » إِذَا كَانَ قَائِمًا فِي الصَّلَاةِ قَبَضَ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ "
সুনানে দারাকুতনী, (শামেলাহ) হা/১১০৪; (ই.ফা.বা.) হা/১০৭৭
মামু! “তাহতাস সুর্রাহ” নাইক্কা।
খাড়াও আরেকটা পাইছি।
(৫) সুনানে নাসাঈ আস সুগরা থেকেঃ
أَخْبَرَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ: أَنْبَأَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ مُوسَى بْنُ عُمَيْرٍ الْعَنْبَرِيِّ، وَقَيْسِ بْنِ سُلَيْمٍ الْعَنْبَرِيِّ قَالَا: حَدَّثَنَا عَلْقَمَةُ بْنِ وَائِلٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَانَ قَائِمًا فِي الصَّلَاةِ قَبَضَ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ»
সুনানে নাসাঈ আস সুগরা, (আলবানী, মা.প্র) হা/৮৮৭; (ই.ফা.বা) হা/৮৯০; (আলী যাই) হা/৮৮৮
শাইখ আলবানী সানাদ সহীহ বলেছেন।
শাইখ যুবায়ের আলী যাই সানাদ সহীহ বলেছেন।
“তাহতাস সুর্রাহ” কিন্তু পাইলাম না মামু!!!
শব্দটা গেল কই?
আচ্ছা। সহীহ মুসলিমে না ওয়ায়েল বিন হুজর থেকে একটা হাদীছ আছে। ঐখানে কি আছে?
আরে! মামুর কও কি? সহীহাইনে থাকলে তো লা মাযহাবীরা তোমাগো জন্মের আগেই আমল করতো।
পড়ুনঃ
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جُحَادَةَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الْجَبَّارِ بْنُ وَائِلٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ، وَمَوْلًى، لَهُمْ أَنَّهُمَا حَدَّثَاهُ عَنْ أَبِيهِ، وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَفَعَ يَدَيْهِ حِينَ دَخَلَ فِي الصَّلاَةِ كَبَّرَ - وَصَفَ هَمَّامٌ حِيَالَ أُذُنَيْهِ - ثُمَّ الْتَحَفَ بِثَوْبِهِ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ أَخْرَجَ يَدَيْهِ مِنَ الثَّوْبِ ثُمَّ رَفَعَهُمَا ثُمَّ كَبَّرَ فَرَكَعَ فَلَمَّا قَالَ ‏ "‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‏"‏ ‏.‏ رَفَعَ يَدَيْهِ فَلَمَّا سَجَدَ سَجَدَ بَيْنَ كَفَّيْهِ ‏.‏
ওয়ায়িল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে।
তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখলেন, তিনি সালাত শুরু করার সময় দুই হাত তুললেন এবং তাকবীর বললেন। হাম্মামের বর্ণনায় আছে, তিনি দুই হাত কান পর্যন্ত উঠালেন; অতঃপর চাঁদরে ঢেকে নিলেন এবং ডান হাত বা হাতের উপর রাখলেন। তিনি যখন রুকু’তে যাওয়ার ইচ্ছা করলেন, উভয় হাত কাপড়ের ভিতর থেকে বের করলেন, অতঃপর উভয় হাত উত্তোলন করলেন, অতঃপর তাকবীর বলে রুকু’তে গেলেন, তিনি যখন "সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ" বললেন দু'হাত উঠালেন। তিনি যখন সাজদায় গেলেন, দু' হাতের মাঝখানে সাজদাহ করলেন।
সহীহ মুসলিম, (হা.একা.) হা/৭৮২; (ই.ফা.বা.) হা/৭৭৯, (ই.সে.বা.) হা/৭৯১
ধুর! “তাহতাস সুর্রাহ” যদি হাদীছে না-ই থাকে তাহলে শাইখ আওয়ামা পাইলো কই এই কথা? সে কি নিজের পক্ষ থেকে যোগ করেছে?
না। তা ঠিক সে যোগ করে নি। এর ইতিহাস আছে। তবে দেওবন্দীরা কিছু তথ্য দিয়েছে। যেমনঃ আনওয়ার শাহ কাশ্মীরি বলেন, আমি মুসন্নাফের তিনটি নুসখা অধ্যয়ন করেছি। তন্মধ্যে একটিতেও (তাহতাস সুর্রাহ বা নাভীর নিচে শব্দাবলী) পাই নি। (ফায়যুল বারী ২/২৬৭)
তাই নাকি?
হুম। বর্তমানে দেওবন্দীরা যাকে শাইখুল ইসলাম বলে তিনি বলেন জাস্টিস তাকী উসমানী। তিনি তার দারসে তিরমিযীতে মুসান্নাফ এর “তাহতাস সুর্রাহ” বা নাভীর নিচে হাত বাঁধার অংশ নিয়ে সন্দেহপোষণ করেছেন এবং সংশয়পূর্ণ বলেছেন। (দারসে তিরমিযী, বাংলা, ২/২২-২৩)
আচ্ছা!!! তো বাকি ইতিহাস কি?
তাহলে ইতিহাসটা পড়েনঃ https://www.mediafire.com/download/tyf12thz436rygu
আর এই লেখাটা কিন্তু পাকিস্তানের আলবানী শাইখ যুবায়ের আলী যাই রাহিমাহুল্লাহ এর “ছলাতে হাত বাঁধার বিধান ও স্থান” বইয়ের ৫০পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত। ঐ বইটাও অবশ্যই পড়বেনঃ https://www.mediafire.com/download/qdel2jwva5jo2q1
আচ্ছা! ইতিহাস পড়ে নেব ইনশাআল্লাহ। তাহলে ওয়ায়েল বিন হুজর অর্থাৎ আলকামা এর পিতা থেকে কি আর কিছু বর্ণিত আছে?
আছে তো।
কি সেটা?
পড়ুনঃ
نا أَبُو مُوسَى، نا مُؤَمَّلٌ، نا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ: «صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى عَلَى صَدْرِهِ»
ওয়ায়িল বিন হুজর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছিলাম, তিনি স্বীয় ডান হাতকে বাম হাতের উপর রেখে তার সিনার উপর স্থাপন করলেন।
সহীহ ইবনু খুযাইমাহ, হা/৪৭৯; বুলুগুল মারাম, (তা.পা.) হা/২৭৮
শাইখ আলবানী সানাদ দ্বঈফ কিন্তু হাদীছ সহীহ বলেছেন।
এটা মূলত সাক্ষ্যমূলক হাদীছ হিসেবে পেশ করা হয়। “ছলাতে হাত বাঁধার বিধান ও স্থান” বইতেই আলোচনা করা হয়েছে। ওয়ায়েল রাঃ থেকে হাত বাঁধার স্থান উল্লেখ ব্যতীত আরো বর্ণনাও আছে।
আচ্ছা বইটি তাহলে পড়তেই হবে।
হুম। পড়েন। আরেক দিন কথা হবে ইনঁশাআল্লাহ।
ও! মামা।
বলো ভাগ্নে।
ইমাম আবু বকর ইবনু আবী শাইবাহ কিন্তু ইমাম বুখারীর উস্তাদ।
হ্যাঁ। তাতো ফরায়েজী সাহেবই উল্লেখ করেছেন।
হুম মামা। সে তো উল্লেখ করেছেই। তা ঐ কিতাবে কিন্তু একটা অধ্যায় আছে। নাম কি জানেন নি?
কি নাম ভাগ্নে?
কিতাবুল রাদ্দি আলা আবি হানীফাহ।
মানে?
মানে টানে থাকুক।
আজকে আসি।
আসসালামু আলাইকুম
চলমান...........

সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭

ওপেন চ্যালেঞ্জঃ নাস্তিকরা কেউ নাস্তিক নয়, নাস্তিক দাবিদার সব সর্বঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী


ওপেন চ্যালেঞ্জঃ নাস্তিকরা কেউ নাস্তিক নয়, নাস্তিক দাবিদার সব সর্বঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী

তথাকথিত নাস্তিকদের কাছে আমার প্রশ্ন ছিল, সৃষ্টির শুরু কোথায়?
নাস্তিকদের উত্তর নিম্নরুপঃ

১. শক্তি সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা, শক্তির সৃষ্টি নাই , শক্তির ধ্বংস নাই

২. কোন কিছুই সৃষ্টি হয় নাই ,কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই, শুধু পরিবর্তনের মাধ্যমে চক্রাকারে সৃষ্টি হয়েছে

৩. আসলে সব সৃষ্টি ভাগ্যক্রমে হয়েছে।

৪. উত্তর জানা নাই।

৫. এই প্রশ্নের উত্তর জানলেই ঈশ্বরের কফিনে শেষ পেরেক বাধবে।

৬. একদিন হয়তো এগুলো আবিস্কার হয়ে যাবে ।

৭. তুই একটা আস্ত গাধা, পাগোল ,কাঠ মোল্লা!!

৮. বিজ্ঞানে এইরকম প্রশ্ন নাই ।

৯. এই টা কোন যুক্তিপুর্ন প্রশ্ন নয়।

১০. তোমাদের ঈশ্বর কেমনে সৃষ্টি হয়ছে??(পাল্টা প্রশ্ন)

তথাকথিত নাস্তিকদের থেকে বিভিন্ন ধরনের উত্তর পেয়ে সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, তারা সবাই ভ্রান্তিতে সন্দেহে ,অনেকে কিছু আস্তিকদের মত জড় বস্তুতে বিশ্বাস এনেছেন এবং সৃষ্টিকর্তা মেনে নিয়েছেন। অনেকে আশায় আছে কবে বিজ্ঞান জানতে পারবে।
তাদের উত্তর গুলোর পর্যালোচনাঃ

১. শক্তি সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা, শক্তির সৃষ্টি নাই , শক্তির ধ্বংস নাইঃ
এই যুক্তি তখনই দেওয়া সম্ভব যখন যুক্তির দৌড় শেষ হয়ে যায় , অস্তিত্ব আসলে কিভাবে আসল তার কারন ব্যাখ্যা অবশ্যই নাস্তিকরা করতে বাধ্য ,আস্তিকরা নয়। আস্তিকরা কেন বাধ্য নয় তা আলোচনা করা হবে ১০ নং প্রশ্নের উত্তরে। নাস্তিকদের অবশ্যই উত্তর দিতে হবে শক্তির জন্ম সূত্র। বিজ্ঞান থেকে একটা মুলনিতী বা উসুলের দলিল দেন যেখান বলা হয়েছে //সূচনা ছাড়া সৃষ্টি হওয়া সম্ভব//। একটি বোনাস প্রশ্ন থাকলো শক্তি থেকে ভর বিশিষ্ট পদার্থ সৃষ্টির ফরমুলাটা দিয়েন তবে আগে প্রথম যুক্তি নিয়ে ভাবুন এই প্রশ্ন পরে ভেবেন।

২. কোন কিছুই সৃষ্টি হয় নাই ,কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই, শুধু পরিবর্তনের মাধ্যমে চক্রাকারে সৃষ্টি হয়েছেঃ
এই পঙ্গু যুক্তি দাড় করিয়ে অনেকে প্রশ্নের জটিলতা থেকে বাচতে চায়ছেন। পরিবর্তনের সংগা কি? পরিবর্তন হতে গেলে প্রথম লাগবে সেই প্রথমের সৃষ্টি নিয়েই আমার প্রশ্ন। //কোন কিছুই সৃষ্টি হয় নাই ,কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই,// আসেন আরেকটু কথা বলি, আপনি যেটা দিয়ে ফেইসবুক চালাচ্ছেন সেটা আসল কি করে?

৩. আসলে সব সৃষ্টি ভাগ্যক্রমে হয়েছেঃ
আরে মিয়া আপনারে কি বলব, আমাদের আস্তিকদের ভেতর অনেকে যুক্তি দিয়ে বুঝে নেয় যে তকদির বলে কিছু নাই, তকদির মানুষের হাতে, অথচ আপনারা তো দেখছি তকদিরে ফুল ফিল বিশ্বাসী হয়ে গেছেন। random এ নাকি সৃষ্টি হয়ছে, তাইলে random এ কেয়ামত ও চলে আসবে রেডি থাইকেন।

৪. উত্তর জানা নাইঃ
উত্তর না জানা থাকলে নিজেরে যুক্তিবাদি বল কোন দুঃখে ?

৫. এই প্রশ্নের উত্তর জানলেই ঈশ্বরের কফিনে শেষ পেরেক বাধবেঃ
যি এই প্রশ্নই আমাদের বিশাসের প্রথম ধাপ ,কোরআনের প্রথম নাযিলকৃত আয়াতঃ পড়, তোমার প্রভুর নামে ,যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ।(আলাক-০১) ,আগে জেনে আসুন এর পর নাস্তিক হন।

৬. একদিন হয়তো এগুলো আবিস্কার হয়ে যাবেঃ
আপনি ফেইসবুকে না থাইকা স্টিপেন হকিং এর সাথে দ্রুত যোগাযোগ করুন এবং একটা টাইম মেশিন বানাইয়া ফিউচারে চলে যান তারপর কথা বলেন।

৭. তুই একটা আস্ত গাধা, পাগোল ,কাঠ মোল্লা!
এইটা কোয়ার জন্যই তথাকথিত নাস্তিক হয়ছোস !

৮. বিজ্ঞানে এইরকম প্রশ্ন নাইঃ
অনেক্ষন পরে একখানা লজিকাল মানুষ পাইলাম , যি বিজ্ঞানে এই প্রশ্ন না থাকারি কথা! বিজ্ঞান সৃস্টির শুরু প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নয় এবং পারবেও না, বিজ্ঞান সেটাই যেটা বাহ্যভাবে দেখতে পাওয়া যায় , ভেতর যখন দেখতে পাবে তখন কথা বলবে তার আগে চুপ থাকবে ,আন্দাজে কথা বলা বিজ্ঞানের কাজ নয় ,আমার কান্দে ১০ টা জিন থাকলেও বিজ্ঞান কথা বলবে না ,অথচ আমি এবং আমরা বুঝতে পারছি ।আশা করি বুঝেছেন।

৯. এই টা কোন যুক্তিপুর্ন প্রশ্ন নয়ঃ
প্রত্যেক যুক্তির সূচনা হয় এই প্রশ্ন দিয়ে।

১০. তোমাদের ঈশ্বর কেমনে সৃষ্টি হয়ছে??(পাল্টা প্রশ্ন)
অনেক্ষন গ্যাজাগ্যাজি করে যখন ক্ষান্ত হয়, তখন তথাকথিত নাস্তিক বাধ্য হয়ে এই প্রশ্ন করে। আপনার পালটা প্রশ্নের যুক্তিযুক্ত উত্তর পেশ করা হলোঃ
আমার প্রশ্ন (সৃষ্টির শুরু কোথায়?) এই প্রশ্নই প্রত্যেক আস্তিকদের প্রথম প্রশ্ন থাকে। কিন্তু আপনাদের তথাকথিন যুক্তি এবং লৌকিক কোন উত্তর আমরা না পাই , তখনই আমরা অলৌকিক //ঈশ্বর// বানিয়ে বা ১০০% সিউর ভাবে ভেবে নিই এবং তার উপর একটা অলৌকিক যুক্তি বসিয়ে দিই সেটা হলো ,তার উপরে কেউ নাই ,  তিনি মহান ,তার উপর কোন যুক্তি নাই , তার আকার আমাদের জানা নাই , তিনি বস্তু ,পদার্থ না কি তা আমরা জানি না ,তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান , তার সাথে আমাদের পৃথিবীর লজিক খাটানো একটা মুর্খামি। তিনি সৃষ্ট নন ,তার প্রথম নাই শেষ নাই ।

এখন এই লজিক গুলো পৃথিবীর লজিকের উপর অবশ্যই অলৌকিক তাই এই অলৌকিক লজিক গুলা লৌকিকের উপর প্রয়োগকরে কতটা মুর্খের মত কাজ করছেন জানাবেন ।
এবার আসি কেন তথাকথিত নাস্তিকদের  সর্বঈশরবাদি বলা হলোঃ
এই সব ক্ষেত্রে তাদের সাথে বারং বার তর্ক করে তারা বর্তমানে শেষ জায়গায় থামে সেটা হলো //শক্তি //। বিজ্ঞান মতেও প্রত্যেক সৃষ্টিই শক্তি থেকে বের হয়েছে। এবং তারা শক্তির উপর একটা বইশিস্ট দাড় করায় //শক্তির সৃষ্টি নাই, শক্তির ধ্বংস নাই// এই বক্তব্যটুকু হলো নাস্তিকদের শেষ  লজিক ,অথচ এটা আমার প্রশ্ন নয় ,এটাকে মুলত বর্তমান বিজ্ঞান দেখছে তাই এই ভাবে একটা মূলনীতি দাড় করিয়েছে, এতে বিজ্ঞানের কোন দোষ নাই । পরে আবার যখন আরো কিছু দেখবে তখন আরো কিছু বলবে ,তবে চ্যালেঞ্জ বিজ্ঞান আমার প্রশ্নের উত্তর খুজে পাবে না । যাই হোক এটা আমার প্রশ্নের উত্তর কখনই হতে পারে না ,আমি যদি বলি যে পানি কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে ,আপনি যদি উত্তরে বলেন পানি তরল । এই পানি তরল এটা কখনই আমার প্রশ্নের উত্তর নয়। আমি সৃষ্টি জানতে চাইলে আপনি বইশিস্ট চাপিয়ে দেচ্ছেন এই হচ্ছে বর্তমান তথাকথিত নাস্তিকদের অবস্থা।
যাইহোক যদি ধরে নেই তাদের বর্তমান বিশ্বাস হলোঃ//শক্তির সৃষ্টি নাই, শক্তির ধ্বংস নাই//  তবে বর্তমান বিজ্ঞান বলছে সব কিছুর সৃষ্টির মুলে শক্তিকে পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু শক্তির সৃষ্টি নাই ধ্বংস নাই শক্তি অমর ,তাই বলা যায় তথাকথিত নাস্তিকদের ঈশ্বর হলো সবকিছু । নাস্তিক বলে নিজেকে দাবি করতে গেলে আস্তিকদের মৌলিক প্রশ্নের সমাধান পাওয়া অবশ্যই জরুরি । এটা সেই প্রশ্ন //সৃষ্টির শুরু কোথায়?//
বিঃদ্রঃ অনেকে মনে করতে পারেন উক্ত ১০ টি মত কোন মুর্খ তথাকথিত নাস্তিকদের মত, অথচ তা নয় এই মত গুলা তথাকথিত নাস্তিক সর্বঈশ্বরবাদে বিশ্বাসীদের সার্বজনিন মত ,কয়টি দলিল পেশ করা হলোঃ
১. বিখ্যাত জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট বস্তুবাদি শব্দের প্রচলিত অর্থে বস্তুবাদে বিশ্বাসী ছিলেন না। অথচ আধুনিক যুগে তিনিই হচ্ছেন প্রথম ব্যাক্তি যিনি বিশ্বজগতকে বস্তুবাদের আলোকে ব্যাখ্যা করেন। কান্ট ঘোষণা করেনঃ এ বিশ্বজগত অনাদি ও অনন্ত এবং কোন কিছুই বিশ্বজগতের বাইরে নয়। উনবিংশ শতাব্দী যখন শুরু হলো, তখন ব্যাপক ভাবে এ ধারনা গৃহীত হচ্ছিল যে, বিশ্বজগতের কোন শুরু নাই এবং একে সৃষ্টিও করা হয় নাই। পরে কার্ল মার্ক্স এবং এঙ্গেলস এই মতকে সমর্থন করে।
২. এই সর্বঈশ্বরবাদিদের গুরু জর্জেস পলিটজার principles fondamentaux de philosophie বইতে বলেন, বিশ্বজগত কোন সৃষ্ট বস্তু নয়। এটি সৃষ্ট হলে অবশ্যই একে তাৎক্ষনিকভাবে একজন স্রষ্টা কর্তৃক সৃষ্ট হতো। সৃষ্টির ধারনা মেনে নিতে হলে এ কথাও মেনে নিতে হয় যে, এমন একটা সময় ছিল যখন বিশ্বজগতের অস্তিত্ব ছিল না এবং আরো মেনে নিতে হয় যে, শুন্য থেকে কোন কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব। অথচ এটি এমন এক কথা যা বিজ্ঞান মেনে নিতে পারে না।
=অথচ বিগব্যাং তত্তের আবিষ্কার হয়ে সব তছনছ হয়ে গেল।
সর্বঈশ্বরবাদের বিপক্ষে কিছু সর্বঈশ্বরবাদে বিশাসিঃ
১. পদার্থবিদ এডিংটন বলেছিলেন, বর্তমানে আমরা যে প্রকৃতি দেখছি সেটি একসময় আকস্মিকভাবে অস্তিত্বলাভ করতে শুরু করেছিল এ ধারনা আমার কাছে ফিলসফিক্যালি অগ্রহনযোগ্য।
২.নাস্তিক অধ্যাপক এন্থনি ফ্লিউ বলেছেন, স্বীকারোক্তি আত্মার জন্য ভালো বলে কুখ্যাতি আছে। আমি স্বীকার করছি যে, সৃষ্টিতত্ত্বসংক্রান্ত সমকালীন সর্বসম্মত মত নাস্তিকদের ভালোরকম বিব্রত করবে। কারন বিশ্বজগতের একটা শুরু ছিল এ কথাটা st. Thomas এর মতে ফিলসফিক্যালি প্রমান করা সম্ভব না হলেও দেখা যাচ্ছে সৃষ্টিতত্ত্ববিদরা এর সপক্ষে বৈজ্ঞানিক প্রমান ঠিকই হাজির করছেন।(বিশ্বজগত কোনো শুরু বা শেষ নেই এ ধারনাটা) যদিও আমি এখনো সঠিক বলেই বিশ্বাস করি, তথাপি বলতেই হচ্ছে যে বিগ ব্যাং তত্ত্বএর উপস্থিতিতে ঐ বিশ্বাসের ওপর স্থির থাকা মোটেই সহজ ও স্বস্থিদায়ক ব্যাপার নয়।
৩. জন মেডক্স বিগ ব্যাং তত্ত্ব এর বিরুদ্ধে লেখেন তিনি// বিগ ব্যাং নিপাত যাক // শিরোনামে লিখেছিলেন, বিগ ব্যাং ফিলসফিক্যালি অগ্রহনযোগ্য এবং তিনি ভবিষ্যৎবানি করেছিলেন যে পরবর্তি দশকে বিগব্যাং টিকে থাকবে না কিন্তু তার উল্টাটাই হলো ।
৪.এইচ লিপসন বলেন, আমি মনে করি আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, সৃষ্টির ধারণা এ ক্ষেত্রে একমাত্র ধারণা যা গ্রহন করা যেতে পারে। এটা মেনে নেয়া আমার মতো অন্য পদার্থবিদদের জন্যও কঠিন। কিন্তু গবেষণালব্ধ প্রমানাদি যখন একে সমর্থন করে, তখন তা স্বীকার না করে উপাই বা কি

৫. জর্জ গ্রীন্সটেইন বলেছেন, (জীবনের সঙ্গে পদার্থবিদ্যার সুত্রসমুহের সঙ্গতিপুর্ন সম্পর্কের ব্যাপারটি) কিভাবে ব্যাখ্যা করা চলে?? প্রাপ্ত সম্ভাব্য সকল তথ্য প্রমান বিচার বিশ্লেষণ করলে তাৎক্ষনিকভাবে মনে হয় যে, কিছু অতিপ্রাক্রিতিক এজেন্সি বা সঠিকভাবে বললে, একটি এজেন্সি ক্রিয়াশিল আছে। এটা কি সম্ভব যে, ইচ্ছায় নয় বরং হঠাত করেই আমরা এমনসব বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমানের সম্মুখীন হয়েছি যেগুলো একজন সর্বোচ্চ সত্তার অস্তিত্ত প্রমান করে? আমাদের সুবিধার্থে এ বিশ্বজগত অত্যান্ত বিচক্ষনতার সাথে সৃষ্টি করেছেন কি তবে ঈশ্বরই ?
৬.জ্যারাল্ড নাস্তিক বিজ্ঞানি বলেন, বস্তুর ভিত্তি হচ্ছে শক্তি এবং বস্তু আসলে জমাটবাধা শক্তি এ সত্য আবিষ্কার করতে মানবাজাতিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে হাজার বছর, অপেক্ষা করতে হয়েছে একজন আইনস্টাইনের জন্মের। আমরা হয়তো আরো একটু বেশি দেরিতে আবিষ্কার করবো যে, শক্তির চেয়েও অধিক মৌলিক কোন অবস্তুই(non-thing) শক্তির ভিত্তি রচনা করেছে।
৭.শ্রোয়েডার বলেছেন, বিশ্বজগতের ঈশ্বরতাত্ত্বিক ব্যাখ্যামতে, বিশ্বজগতের সবকিছুই এক অতিপ্রাকৃত জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ। যদি আমি জ্ঞান শব্দটিকে তথ্য শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপন করি, তবে ঈশ্বরতত্ত্বও কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার মধ্যে তেমন কোনো বিরোধ থাকে না। আসলে, আমরা সম্ভবত বস্তুজগতের সঙ্গে আধ্যাত্মিক জগতের বৈজ্ঞানিক মিলন প্রত্যক্ষ করছি

**A-Z না পড়ে মন্তব্য করবেন না**

Farhan Khan Salafi

শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৭

সালাতে ইমামের পিছনে সুরা ফাতেহা পড়া হারাম নাকি ফরজ ???

সালাতে ইমামের
পিছনে সুরা ফাতেহা
পড়া হারাম
নাকি ফরজ ???

"যখন কুরআন
তেলাওয়াত
করা হয়,তোমরা তা
মণযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ
থাকো যাতে তোমাদের উপর রহম করা হয় "(আরাফ-
আয়াতঃ২০৪)

এই
আয়াতের সংগে
সালাতে ইমামের
পিছনে সুরা ফাতেহা
পড়া বা না পড়ার
কোনো সম্পর্ক নেই।

কারণ
এ আয়াত মক্কায়
নাজিল হয়েছে,

আর নামাজে সুরা ফাতেহা পড়ার নির্দেশ হিযরতের পর রাসুল(সঃ) দিয়েছেন মদিনায়।

[ সূরা: Al-A'raaf (The Heights) মক্কায় অবতীর্ণ সূরা নং: ৭  আয়াত সংখ্যা: ২০৬

204
. ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻗُﺮِﺉَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﻓَﺎﺳْﺘَﻤِﻌُﻮﺍ ﻟَﻪُ ﻭَﺃَﻧﺼِﺘُﻮﺍ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗُﺮْﺣَﻤُﻮﻥَ
আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়।]

আবু হুরায়রা(রাঃ) ৭ম হিজরীতে মদিনায় মুসলমান
হয়েছেন,

আর তাকেই সর্ব প্রথম মদিনার ওলীতে গোলিতে এ
কথা ঘোষণা দেয়ার
জন্নে রাসুল (সাঃ)
আদেশ করেন,  যে ব্যক্তি সালাতে সুরা ফাতেহা পড়েনা তার নামাজ
হবে না।
(বায়হাকী-খন্ডঃ ২-
পৃস্টাঃ৩৭৫)

সহিহ মুসলিমের বর্ণনায় আছে, ঐ
সময় ১ ব্যক্তি আবু
হুরায়রার হাত ধরে
বলেনঃ আমরা যদি
ইমামের পিছনে থাকি তা ও
কি পড়া লাগবে?
তিনি বলেন তাও.…

  রাসুল (সাঃ) বলেনঃ আমি যখন জোড়ে কেরাত পড়ি তখন তোমরা সুরা ফাতেহা ছাড়া আর কিছুই পড়োনা।
(নাসাঈ,সনদ সহিহ)

এই কথার সাক্ষি যিনি দিলেন
তিনি" উবাদা "
তিনি ইমামের
পিছনে সুরা ফাতেহা
পড়তেন (কিতাবুল কেরাত- বায়হাকি- ২য় খন্ড-১৬৮
পৃষ্টা)..…

উপরের আয়াত
নাজিল হওয়ার কারনঃ রাসুল (সাঃ)
মক্কায় যখন সাধারণ ভাবে কাফেরদের কে কুরআন শুনাচ্ছিলেন
তখন কাফেররা একে অপরকে বলেছিলো তোমরা তা শুননা,
চিল্লা পাল্লা কর।
তাহলে তোমরা জয়ি
হবে,তখন এই উপড়ের আয়াত
নাজিল হল।যে,রাসুল(সাঃ)
যখন কুরআন
পড়ে তোমরা ইহুদিরা তখন
চুপ থাকো ও মনোযোগ সহ তা শুনতে থাকো
হয়তো তোমাদের
উপর রহম করা হবে। বিশ্বাস না হলে দেখুন

সুরাঃ হামিম আস-
সিজদাহর ২৬নং
আয়াতে.…

[ সূরা: Fussilat (হা মিম সাজদাহ) (Explained in detail) মক্কায় অবতীর্ণ সূরা নং: ৪১  আয়াত সংখ্যা: ৫৪

26
. ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻟَﺎ ﺗَﺴْﻤَﻌُﻮﺍ ﻟِﻬَٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ ﻭَﺍﻟْﻐَﻮْﺍ ﻓِﻴﻪِ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗَﻐْﻠِﺒُﻮﻥَ
আর কাফেররা বলে, তোমরা এ কোরআন শ্রবণ করো না এবং এর আবৃত্তিতে হঞ্জগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ী হও।]

এইটাকে হানাফিরা চালিয়ে দেয় ইমামের পিছনে মুসল্লীরা চুপ থাকবে ও বলে

হানাফিরা কি প্রমান দিতে পারবে যে আরাফের ঐ আয়াতে মাদানী অর্থাত্‍ রাসূলের মেরাজের পর নাজিল হয়েছে ?????

আমাদের দলিল হল কুরআন…