ওপেন চ্যালেঞ্জঃ নাস্তিকরা কেউ নাস্তিক নয়, নাস্তিক দাবিদার সব সর্বঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী
তথাকথিত নাস্তিকদের কাছে আমার প্রশ্ন ছিল, সৃষ্টির শুরু কোথায়?
নাস্তিকদের উত্তর নিম্নরুপঃ
১. শক্তি সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা, শক্তির সৃষ্টি নাই , শক্তির ধ্বংস নাই
।
২. কোন কিছুই সৃষ্টি হয় নাই ,কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই, শুধু পরিবর্তনের মাধ্যমে চক্রাকারে সৃষ্টি হয়েছে
৩. আসলে সব সৃষ্টি ভাগ্যক্রমে হয়েছে।
৪. উত্তর জানা নাই।
৫. এই প্রশ্নের উত্তর জানলেই ঈশ্বরের কফিনে শেষ পেরেক বাধবে।
৬. একদিন হয়তো এগুলো আবিস্কার হয়ে যাবে ।
৭. তুই একটা আস্ত গাধা, পাগোল ,কাঠ মোল্লা!!
৮. বিজ্ঞানে এইরকম প্রশ্ন নাই ।
৯. এই টা কোন যুক্তিপুর্ন প্রশ্ন নয়।
১০. তোমাদের ঈশ্বর কেমনে সৃষ্টি হয়ছে??(পাল্টা প্রশ্ন)
তথাকথিত নাস্তিকদের থেকে বিভিন্ন ধরনের উত্তর পেয়ে সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, তারা সবাই ভ্রান্তিতে সন্দেহে ,অনেকে কিছু আস্তিকদের মত জড় বস্তুতে বিশ্বাস এনেছেন এবং সৃষ্টিকর্তা মেনে নিয়েছেন। অনেকে আশায় আছে কবে বিজ্ঞান জানতে পারবে।
তাদের উত্তর গুলোর পর্যালোচনাঃ
১. শক্তি সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা, শক্তির সৃষ্টি নাই , শক্তির ধ্বংস নাইঃ
এই যুক্তি তখনই দেওয়া সম্ভব যখন যুক্তির দৌড় শেষ হয়ে যায় , অস্তিত্ব আসলে কিভাবে আসল তার কারন ব্যাখ্যা অবশ্যই নাস্তিকরা করতে বাধ্য ,আস্তিকরা নয়। আস্তিকরা কেন বাধ্য নয় তা আলোচনা করা হবে ১০ নং প্রশ্নের উত্তরে। নাস্তিকদের অবশ্যই উত্তর দিতে হবে শক্তির জন্ম সূত্র। বিজ্ঞান থেকে একটা মুলনিতী বা উসুলের দলিল দেন যেখান বলা হয়েছে //সূচনা ছাড়া সৃষ্টি হওয়া সম্ভব//। একটি বোনাস প্রশ্ন থাকলো শক্তি থেকে ভর বিশিষ্ট পদার্থ সৃষ্টির ফরমুলাটা দিয়েন তবে আগে প্রথম যুক্তি নিয়ে ভাবুন এই প্রশ্ন পরে ভেবেন।
২. কোন কিছুই সৃষ্টি হয় নাই ,কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই, শুধু পরিবর্তনের মাধ্যমে চক্রাকারে সৃষ্টি হয়েছেঃ
এই পঙ্গু যুক্তি দাড় করিয়ে অনেকে প্রশ্নের জটিলতা থেকে বাচতে চায়ছেন। পরিবর্তনের সংগা কি? পরিবর্তন হতে গেলে প্রথম লাগবে সেই প্রথমের সৃষ্টি নিয়েই আমার প্রশ্ন। //কোন কিছুই সৃষ্টি হয় নাই ,কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই,// আসেন আরেকটু কথা বলি, আপনি যেটা দিয়ে ফেইসবুক চালাচ্ছেন সেটা আসল কি করে?
৩. আসলে সব সৃষ্টি ভাগ্যক্রমে হয়েছেঃ
আরে মিয়া আপনারে কি বলব, আমাদের আস্তিকদের ভেতর অনেকে যুক্তি দিয়ে বুঝে নেয় যে তকদির বলে কিছু নাই, তকদির মানুষের হাতে, অথচ আপনারা তো দেখছি তকদিরে ফুল ফিল বিশ্বাসী হয়ে গেছেন। random এ নাকি সৃষ্টি হয়ছে, তাইলে random এ কেয়ামত ও চলে আসবে রেডি থাইকেন।
৪. উত্তর জানা নাইঃ
উত্তর না জানা থাকলে নিজেরে যুক্তিবাদি বল কোন দুঃখে ?
৫. এই প্রশ্নের উত্তর জানলেই ঈশ্বরের কফিনে শেষ পেরেক বাধবেঃ
যি এই প্রশ্নই আমাদের বিশাসের প্রথম ধাপ ,কোরআনের প্রথম নাযিলকৃত আয়াতঃ পড়, তোমার প্রভুর নামে ,যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ।(আলাক-০১) ,আগে জেনে আসুন এর পর নাস্তিক হন।
৬. একদিন হয়তো এগুলো আবিস্কার হয়ে যাবেঃ
আপনি ফেইসবুকে না থাইকা স্টিপেন হকিং এর সাথে দ্রুত যোগাযোগ করুন এবং একটা টাইম মেশিন বানাইয়া ফিউচারে চলে যান তারপর কথা বলেন।
৭. তুই একটা আস্ত গাধা, পাগোল ,কাঠ মোল্লা!
এইটা কোয়ার জন্যই তথাকথিত নাস্তিক হয়ছোস !
৮. বিজ্ঞানে এইরকম প্রশ্ন নাইঃ
অনেক্ষন পরে একখানা লজিকাল মানুষ পাইলাম , যি বিজ্ঞানে এই প্রশ্ন না থাকারি কথা! বিজ্ঞান সৃস্টির শুরু প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নয় এবং পারবেও না, বিজ্ঞান সেটাই যেটা বাহ্যভাবে দেখতে পাওয়া যায় , ভেতর যখন দেখতে পাবে তখন কথা বলবে তার আগে চুপ থাকবে ,আন্দাজে কথা বলা বিজ্ঞানের কাজ নয় ,আমার কান্দে ১০ টা জিন থাকলেও বিজ্ঞান কথা বলবে না ,অথচ আমি এবং আমরা বুঝতে পারছি ।আশা করি বুঝেছেন।
৯. এই টা কোন যুক্তিপুর্ন প্রশ্ন নয়ঃ
প্রত্যেক যুক্তির সূচনা হয় এই প্রশ্ন দিয়ে।
১০. তোমাদের ঈশ্বর কেমনে সৃষ্টি হয়ছে??(পাল্টা প্রশ্ন)
অনেক্ষন গ্যাজাগ্যাজি করে যখন ক্ষান্ত হয়, তখন তথাকথিত নাস্তিক বাধ্য হয়ে এই প্রশ্ন করে। আপনার পালটা প্রশ্নের যুক্তিযুক্ত উত্তর পেশ করা হলোঃ
আমার প্রশ্ন (সৃষ্টির শুরু কোথায়?) এই প্রশ্নই প্রত্যেক আস্তিকদের প্রথম প্রশ্ন থাকে। কিন্তু আপনাদের তথাকথিন যুক্তি এবং লৌকিক কোন উত্তর আমরা না পাই , তখনই আমরা অলৌকিক //ঈশ্বর// বানিয়ে বা ১০০% সিউর ভাবে ভেবে নিই এবং তার উপর একটা অলৌকিক যুক্তি বসিয়ে দিই সেটা হলো ,তার উপরে কেউ নাই , তিনি মহান ,তার উপর কোন যুক্তি নাই , তার আকার আমাদের জানা নাই , তিনি বস্তু ,পদার্থ না কি তা আমরা জানি না ,তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান , তার সাথে আমাদের পৃথিবীর লজিক খাটানো একটা মুর্খামি। তিনি সৃষ্ট নন ,তার প্রথম নাই শেষ নাই ।
এখন এই লজিক গুলো পৃথিবীর লজিকের উপর অবশ্যই অলৌকিক তাই এই অলৌকিক লজিক গুলা লৌকিকের উপর প্রয়োগকরে কতটা মুর্খের মত কাজ করছেন জানাবেন ।
এবার আসি কেন তথাকথিত নাস্তিকদের সর্বঈশরবাদি বলা হলোঃ
এই সব ক্ষেত্রে তাদের সাথে বারং বার তর্ক করে তারা বর্তমানে শেষ জায়গায় থামে সেটা হলো //শক্তি //। বিজ্ঞান মতেও প্রত্যেক সৃষ্টিই শক্তি থেকে বের হয়েছে। এবং তারা শক্তির উপর একটা বইশিস্ট দাড় করায় //শক্তির সৃষ্টি নাই, শক্তির ধ্বংস নাই// এই বক্তব্যটুকু হলো নাস্তিকদের শেষ লজিক ,অথচ এটা আমার প্রশ্ন নয় ,এটাকে মুলত বর্তমান বিজ্ঞান দেখছে তাই এই ভাবে একটা মূলনীতি দাড় করিয়েছে, এতে বিজ্ঞানের কোন দোষ নাই । পরে আবার যখন আরো কিছু দেখবে তখন আরো কিছু বলবে ,তবে চ্যালেঞ্জ বিজ্ঞান আমার প্রশ্নের উত্তর খুজে পাবে না । যাই হোক এটা আমার প্রশ্নের উত্তর কখনই হতে পারে না ,আমি যদি বলি যে পানি কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে ,আপনি যদি উত্তরে বলেন পানি তরল । এই পানি তরল এটা কখনই আমার প্রশ্নের উত্তর নয়। আমি সৃষ্টি জানতে চাইলে আপনি বইশিস্ট চাপিয়ে দেচ্ছেন এই হচ্ছে বর্তমান তথাকথিত নাস্তিকদের অবস্থা।
যাইহোক যদি ধরে নেই তাদের বর্তমান বিশ্বাস হলোঃ//শক্তির সৃষ্টি নাই, শক্তির ধ্বংস নাই// তবে বর্তমান বিজ্ঞান বলছে সব কিছুর সৃষ্টির মুলে শক্তিকে পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু শক্তির সৃষ্টি নাই ধ্বংস নাই শক্তি অমর ,তাই বলা যায় তথাকথিত নাস্তিকদের ঈশ্বর হলো সবকিছু । নাস্তিক বলে নিজেকে দাবি করতে গেলে আস্তিকদের মৌলিক প্রশ্নের সমাধান পাওয়া অবশ্যই জরুরি । এটা সেই প্রশ্ন //সৃষ্টির শুরু কোথায়?//
বিঃদ্রঃ অনেকে মনে করতে পারেন উক্ত ১০ টি মত কোন মুর্খ তথাকথিত নাস্তিকদের মত, অথচ তা নয় এই মত গুলা তথাকথিত নাস্তিক সর্বঈশ্বরবাদে বিশ্বাসীদের সার্বজনিন মত ,কয়টি দলিল পেশ করা হলোঃ
১. বিখ্যাত জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট বস্তুবাদি শব্দের প্রচলিত অর্থে বস্তুবাদে বিশ্বাসী ছিলেন না। অথচ আধুনিক যুগে তিনিই হচ্ছেন প্রথম ব্যাক্তি যিনি বিশ্বজগতকে বস্তুবাদের আলোকে ব্যাখ্যা করেন। কান্ট ঘোষণা করেনঃ এ বিশ্বজগত অনাদি ও অনন্ত এবং কোন কিছুই বিশ্বজগতের বাইরে নয়। উনবিংশ শতাব্দী যখন শুরু হলো, তখন ব্যাপক ভাবে এ ধারনা গৃহীত হচ্ছিল যে, বিশ্বজগতের কোন শুরু নাই এবং একে সৃষ্টিও করা হয় নাই। পরে কার্ল মার্ক্স এবং এঙ্গেলস এই মতকে সমর্থন করে।
২. এই সর্বঈশ্বরবাদিদের গুরু জর্জেস পলিটজার principles fondamentaux de philosophie বইতে বলেন, বিশ্বজগত কোন সৃষ্ট বস্তু নয়। এটি সৃষ্ট হলে অবশ্যই একে তাৎক্ষনিকভাবে একজন স্রষ্টা কর্তৃক সৃষ্ট হতো। সৃষ্টির ধারনা মেনে নিতে হলে এ কথাও মেনে নিতে হয় যে, এমন একটা সময় ছিল যখন বিশ্বজগতের অস্তিত্ব ছিল না এবং আরো মেনে নিতে হয় যে, শুন্য থেকে কোন কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব। অথচ এটি এমন এক কথা যা বিজ্ঞান মেনে নিতে পারে না।
=অথচ বিগব্যাং তত্তের আবিষ্কার হয়ে সব তছনছ হয়ে গেল।
সর্বঈশ্বরবাদের বিপক্ষে কিছু সর্বঈশ্বরবাদে বিশাসিঃ
১. পদার্থবিদ এডিংটন বলেছিলেন, বর্তমানে আমরা যে প্রকৃতি দেখছি সেটি একসময় আকস্মিকভাবে অস্তিত্বলাভ করতে শুরু করেছিল এ ধারনা আমার কাছে ফিলসফিক্যালি অগ্রহনযোগ্য।
২.নাস্তিক অধ্যাপক এন্থনি ফ্লিউ বলেছেন, স্বীকারোক্তি আত্মার জন্য ভালো বলে কুখ্যাতি আছে। আমি স্বীকার করছি যে, সৃষ্টিতত্ত্বসংক্রান্ত সমকালীন সর্বসম্মত মত নাস্তিকদের ভালোরকম বিব্রত করবে। কারন বিশ্বজগতের একটা শুরু ছিল এ কথাটা st. Thomas এর মতে ফিলসফিক্যালি প্রমান করা সম্ভব না হলেও দেখা যাচ্ছে সৃষ্টিতত্ত্ববিদরা এর সপক্ষে বৈজ্ঞানিক প্রমান ঠিকই হাজির করছেন।(বিশ্বজগত কোনো শুরু বা শেষ নেই এ ধারনাটা) যদিও আমি এখনো সঠিক বলেই বিশ্বাস করি, তথাপি বলতেই হচ্ছে যে বিগ ব্যাং তত্ত্বএর উপস্থিতিতে ঐ বিশ্বাসের ওপর স্থির থাকা মোটেই সহজ ও স্বস্থিদায়ক ব্যাপার নয়।
৩. জন মেডক্স বিগ ব্যাং তত্ত্ব এর বিরুদ্ধে লেখেন তিনি// বিগ ব্যাং নিপাত যাক // শিরোনামে লিখেছিলেন, বিগ ব্যাং ফিলসফিক্যালি অগ্রহনযোগ্য এবং তিনি ভবিষ্যৎবানি করেছিলেন যে পরবর্তি দশকে বিগব্যাং টিকে থাকবে না কিন্তু তার উল্টাটাই হলো ।
৪.এইচ লিপসন বলেন, আমি মনে করি আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, সৃষ্টির ধারণা এ ক্ষেত্রে একমাত্র ধারণা যা গ্রহন করা যেতে পারে। এটা মেনে নেয়া আমার মতো অন্য পদার্থবিদদের জন্যও কঠিন। কিন্তু গবেষণালব্ধ প্রমানাদি যখন একে সমর্থন করে, তখন তা স্বীকার না করে উপাই বা কি
৫. জর্জ গ্রীন্সটেইন বলেছেন, (জীবনের সঙ্গে পদার্থবিদ্যার সুত্রসমুহের সঙ্গতিপুর্ন সম্পর্কের ব্যাপারটি) কিভাবে ব্যাখ্যা করা চলে?? প্রাপ্ত সম্ভাব্য সকল তথ্য প্রমান বিচার বিশ্লেষণ করলে তাৎক্ষনিকভাবে মনে হয় যে, কিছু অতিপ্রাক্রিতিক এজেন্সি বা সঠিকভাবে বললে, একটি এজেন্সি ক্রিয়াশিল আছে। এটা কি সম্ভব যে, ইচ্ছায় নয় বরং হঠাত করেই আমরা এমনসব বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমানের সম্মুখীন হয়েছি যেগুলো একজন সর্বোচ্চ সত্তার অস্তিত্ত প্রমান করে? আমাদের সুবিধার্থে এ বিশ্বজগত অত্যান্ত বিচক্ষনতার সাথে সৃষ্টি করেছেন কি তবে ঈশ্বরই ?
৬.জ্যারাল্ড নাস্তিক বিজ্ঞানি বলেন, বস্তুর ভিত্তি হচ্ছে শক্তি এবং বস্তু আসলে জমাটবাধা শক্তি এ সত্য আবিষ্কার করতে মানবাজাতিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে হাজার বছর, অপেক্ষা করতে হয়েছে একজন আইনস্টাইনের জন্মের। আমরা হয়তো আরো একটু বেশি দেরিতে আবিষ্কার করবো যে, শক্তির চেয়েও অধিক মৌলিক কোন অবস্তুই(non-thing) শক্তির ভিত্তি রচনা করেছে।
৭.শ্রোয়েডার বলেছেন, বিশ্বজগতের ঈশ্বরতাত্ত্বিক ব্যাখ্যামতে, বিশ্বজগতের সবকিছুই এক অতিপ্রাকৃত জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ। যদি আমি জ্ঞান শব্দটিকে তথ্য শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপন করি, তবে ঈশ্বরতত্ত্বও কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার মধ্যে তেমন কোনো বিরোধ থাকে না। আসলে, আমরা সম্ভবত বস্তুজগতের সঙ্গে আধ্যাত্মিক জগতের বৈজ্ঞানিক মিলন প্রত্যক্ষ করছি
**A-Z না পড়ে মন্তব্য করবেন না**
Farhan Khan Salafi