সোমবার, ২৩ মে, ২০১৬
শবে বরাতী বিদ’আতীদের সর্বশেষ অস্ত্রঃ
শবেবরাতী
বিদ’আতীদের
সর্বশেষ অস্ত্রঃ
===============
===========
শবে বারাত যায়েজ
করার জন্য
বিদ’আতীরা
সর্বশেষ অস্ত্র
হিসাবে যে কথা বলে
থাকে তা হলো,
“ফজিলতের
ক্ষেত্রে জঈফ
হাদীস পালন যোগ্য।”
কোন হাদীস দূর্বল
তখনই হয় যখন তার
বর্ণনাকারীর কেউ
মিথ্যূক,
স্মরনশক্তি না
থাকা, শিয়া
আক্বীদা সম্পন্ন
হওয়া ইত্যাদি দোষ
অভিযুক্ত থাকে।
মুসলীম শরীফের
মোকাদ্দমা অধ্যায়টি
পর্যালোচনা করলে
দেখা যায় যে,
সালাফগণের
আক্বীদা ছিলো
জঈফ রাবীদের
নিকট হতে তারা
হাদীস গ্রহণ
করতেন না। আমি
নিচে তার কয়েকটি
উল্লেখ করলামঃ
■ হাদীস একঃ
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺇِﺳْﺤَﺎﻕُ ﺑْﻦُ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ
ﺍﻟْﺤَﻨْﻈَﻠِﻲُّ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻋِﻴﺴَﻰ، -
ﻭَﻫُﻮَ ﺍﺑْﻦُ ﻳُﻮﻧُﺲَ - ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ
ﺍﻷَﻭْﺯَﺍﻋِﻲُّ، ﻋَﻦْ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥَ ﺑْﻦِ
ﻣُﻮﺳَﻰ، ﻗَﺎﻝَ ﻟَﻘِﻴﺖُ ﻃَﺎﻭُﺳًﺎ
ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﻓُﻼَﻥٌ، ﻛَﻴْﺖَ
ﻭَﻛَﻴْﺖَ . ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ
ﺻَﺎﺣِﺒُﻚَ ﻣَﻠِﻴًّﺎ ﻓَﺨُﺬْ ﻋَﻨْﻪُ
-সুলায়মান ইবনু মুসা
(আঃ) থেকে বর্ণিত
যে, তিনি বলেন,
আমি তাউস (রহঃ)
এর সঙ্গে সাক্ষাৎ
করলাম এবং বললাম,
অমুক ব্যক্তি
আমাকে এরূপ হাদীস
শুনিয়েছেন। তিনি
বললেন, সে ব্যক্তি
যদি নির্ভরযোগ্য
হয়, তা হলে তাঁর
থেকে হাদীস গ্রহণ
করো।
[সহীহ মুলসীম
মোকাদ্দমা,
অধ্যায়ঃ৫, ..হাদীসের
সনদ বর্ণনা করা
নির্ভরযোগ্য বর্ণনা
ছাড়া রিওয়াত গ্রহণ
না করা....]
■ হাদীস দুইঃ
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻧَﺼْﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﻠِﻲٍّ
ﺍﻟْﺠَﻬْﻀَﻤِﻲُّ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ
ﺍﻷَﺻْﻤَﻌِﻲُّ، ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ
ﺍﻟﺰِّﻧَﺎﺩِ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻗَﺎﻝَ
ﺃَﺩْﺭَﻛْﺖُ ﺑِﺎﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ ﻣِﺎﺋَﺔً
ﻛُﻠُّﻬُﻢْ ﻣَﺄْﻣُﻮﻥٌ . ﻣَﺎ ﻳُﺆْﺧَﺬُ
ﻋَﻨْﻬُﻢُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚُ ﻳُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻴْﺲَ
ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻠِﻪِ
-ইবনু আবু যিনাদ
(রহঃ) তাঁর পিতার
সূত্রে বর্ণনা করেন,
তিনি বলেন আমি
মদীনার একশ’ জন
লোকের সাক্ষাৎ
পেয়েছি যারা মিথ্যা
থেকে নিরাপদ
ছিলেন, তবুও তাদের
কাছে থেকে
হাদীসগ্রহণ করা
হতো না, কেননা
তাদের সম্পর্কে বলা
হতো যে, তাদের কেউ
হাদীস বর্ণনা করা
ক্ষেত্রে যোগ্য নন।
[সহীহ মুলসীম
মোকাদ্দমা,
অধ্যায়ঃ৫, ..হাদীসের
সনদ বর্ণনা করা
নির্ভরযোগ্য বর্ণনা
ছাড়া রিওয়াত গ্রহণ
না করা....]
■ হাদীস তিনঃ
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻋُﻤَﺮَ
ﺍﻟْﻤَﻜِّﻲُّ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥُ، ﺡ
ﻭَﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮِ ﺑْﻦُ ﺧَﻼَّﺩٍ
ﺍﻟْﺒَﺎﻫِﻠِﻲُّ، - ﻭَﺍﻟﻠَّﻔْﻆُ ﻟَﻪُ - ﻗَﺎﻝَ
ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥَ ﺑْﻦَ ﻋُﻴَﻴْﻨَﺔَ،
ﻋَﻦْ ﻣِﺴْﻌَﺮٍ، ﻗَﺎﻝَ ﺳَﻤِﻌْﺖُ
ﺳَﻌْﺪَ ﺑْﻦَ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻳَﻘُﻮﻝُ
ﻻَ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﻋَﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇِﻻَّ
ﺍﻟﺜِّﻘَﺎﺕُ
-মুহাম্মদ ইবুন আবু
উমার আল মাক্কী ও
আবু বাক্বর ইবনু
খাল্লাদ আল বাহিলী
(রহঃ) .. মিস’আর
(রহঃ) থেকে বর্ণনা
করেন যে, তিনি
বলেন, আমি সা’দ
ইবনু ইব্রাহীমকে
বলতে শুনেছি,
নির্ভযোগ্য ব্যক্তি
(সিকাহ) ব্যতিত
অন্য কারো কাছে
থেকে রাসুলুল্লাহ
(সঃ) এর হাদীস
গৃহীত হবে না।
[সহীহ মুলসীম
মোকাদ্দমা,
অধ্যায়ঃ৫, ..হাদীসের
সনদ বর্ণনা করা
নির্ভরযোগ্য বর্ণনা
ছাড়া রিওয়াত গ্রহণ
না করা....]
■ হাদীস চারঃ
ﻛَﻔَﻰ ﺑِﺎﻟْﻤَﺮْﺀِ ﻛَﺬِﺑًﺎ ﺃَﻥْ
ﻳُﺤَﺪِّﺙَ ﺑِﻜُﻞِّ ﻣَﺎ ﺳَﻤِﻊَ
-কোন ব্যক্তি
মিথ্যাবাদী হওয়ার
জন্য এতটুকুই
যথেষ্ট যে, সে যা
শুনে তাই বলে
বেড়ায়।
[সহীহ মুলসীম
মোকাদ্দমা,
অধ্যায়ঃ৩, যা শুনে তা
বর্ণনা করা নিষিদ্ধ]
►►দেখুন সাহাবীরা
নির্ভরযোগ্য
ব্যক্তি ব্যতিত
হাদীস গ্রহণ করতে
নিষেধ করছেন, আর
আপনি দূর্বল
ব্যক্তির হাদীস
অবলিলায় গ্রহণ
করছেন! আপনার বুঝ
কি সাহাবীদের
চাইতে ভালো?
বস্তুত জঈফ বা
দূর্বল হাদীস হলো
রাসূল ﷺ এর সূন্নাহর
ব্যাপারে কিছু
অনুমান-ধারণার
সৃষ্টি করে মাত্র।
অথচ কোরআন ও
হাদীসে এমন অনুমান
নিষেধ, নিচে তার
প্রমান দেখুনঃ
মহান আল্লাহ বলেন,
ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺘَّﺒِﻊُ ﺃَﻛْﺜَﺮُﻫُﻢْ ﺇِﻟَّﺎ ﻇَﻨًّﺎ ۚ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻈَّﻦَّ ﻟَﺎ ﻳُﻐْﻨِﻲ ﻣِﻦَ
ﺍﻟْﺤَﻖِّ ﺷَﻴْﺌًﺎ ۚ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻋَﻠِﻴﻢٌ
ﺑِﻤَﺎ ﻳَﻔْﻌَﻠُﻮﻥَ
-আসলে তাদের
বেশীরভাগ লোকই
নিছক আন্দাজ -
অনুমানের পেছনে
চলছে৷ অথচ আন্দাজ
-অনুমান দ্বারা
সত্যের প্রয়োজন
কিছুমাত্র মেটে না৷
তারা যা কিছু করছে
তা আল্লাহ
ভালভাবেই জানেন৷
[সূরা ইউনুস ৩৬]
মহান আল্লাহ আরও
বলেন,
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺇِﻥ
ﺟَﺎﺀَﻛُﻢْ ﻓَﺎﺳِﻖٌ ﺑِﻨَﺒَﺈٍ ﻓَﺘَﺒَﻴَّﻨُﻮﺍ
ﺃَﻥ ﺗُﺼِﻴﺒُﻮﺍ ﻗَﻮْﻣًﺎ ﺑِﺠَﻬَﺎﻟَﺔٍ
ﻓَﺘُﺼْﺒِﺤُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰٰ ﻣَﺎ ﻓَﻌَﻠْﺘُﻢْ
ﻧَﺎﺩِﻣِﻴﻦَ
-হে ঈমান
গ্রহণকারীগণ, যদি
কোন ফাসেক
তোমাদের কাছে কোন
খবর নিয়ে আসে
তাহলে তা অনুসন্ধান
করে দেখ৷ এমন যেন
না হয় যে, না জেনে
শুনেই তোমরা কোন
গোষ্ঠীর ক্ষতি করে
বসবে এবং পরে
নিজেদের
কৃতকর্মের জন্য
লজ্জিত হবে৷[সূরা
হুজুরাত ৬]
এ সম্পর্কিত এক
হাদীস হলোঃ -আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত রাসূল ﷺ
বলেছেন,
ﺇِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﺍﻟﻈَّﻦَّ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻈَّﻦَّ
ﺃَﻛْﺬَﺏُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚ
-তোমরা ধারণা-
অনুমান থেকে বেঁচে
থাক কারণ ধারণা-
অনুমান সর্বাপেক্ষা
মিথ্যা কথা।
[বোখারী
হা/৬০৬৬,৬৭২৪;
মুসলিম হা/৬৪৩০]
এ সর্ম্পকিত আর
হাদীস দেখুন বুখারী
১০৬,১০৭,১০৮,১০৯,
১২৯১, ৩৪৬১, ১২৯১;
মিশকাত ১৯৯;
মুসলীম মোকদ্দমা
অধ্যায়।
→জঈফ তথা দূর্বল
হাদীস যে পালনীয়
নয় তার জন্য
উপরোক্ত
দলিলগুলোই যথেষ্ট।
শরীয়তের কোন
ক্ষেত্রেই তা
গ্রহণযোগ্য নয়, তা
হালাল-হারামের
ক্ষেত্রে হোক বা
ওয়াজ-নসীহত,
ফজিলত সহ যে কোন
বিষয়ে হোক।
দূর্বল হাদীস
ইসলামী শরীয়তে
জায়েজ-ই হবে,
তাহলে সম্মানিত
মুহাদ্দিসগণের এত
কষ্টের কি দরকার
ছিলো? যুগে যুগে তাঁরা
রাসূল ﷺ এর অগনিত
হাদীস হতে কোনটি
রাসূলের হাদীস আর
কোনটি তাঁর হাদীস
নয়, তা পৃথক
করেছেন; এখন
আপনি যদি বলেন,
ইমান আক্বীদার
ক্ষেত্রে সহীহ
হাদীস মানবো, আর
ফাজিলতের
ক্ষেত্রে সহীহ
পাশাপাশি জঈফও
আমল করা যাবে। তা
হলে ব্যাপারটি কি
দাড়ালো?
ফজিলত কি
ইসলামী শরীয়তের
অংশ নয়?
আপনাদের মতো
হুজুরেরা জঈফ
হাদীসকে শিথিলতা
দেখানের কারনে আজ
অনেকেই রাসুল ﷺ
হাদীস যাচাই-
বাছাইয়ের প্রয়োজন
মনে করেন না। অথচ
এর কারনে সাহাবী,
তাবেঈ, ও
মুহাদ্দিসগণের
বিশাল পরিশ্রম
মূল্যহীন হয়ে
পড়েছে। এই সুযোগে
জাল হাদীসের
অনুপ্রবেশ ঘটছে
ইসলামে এবং চরম
বিভ্রান্তির সৃষ্টি
হয়েছে।
সর্বশেষ জঈফ
হাদীস বর্জনে
চুড়ান্ত বক্তব্য
হলো জঈফ হাদীস
পালনের মাধ্যমে
আল্লাহর বিধানকে
দূর্বল তথা
ত্রুটিযুক্ত ধারনা
করা হচ্ছে।অথচ
আল্লাহর বিধান
সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত,
এখানে বিন্দুমাত্র
সন্দেহ বা ত্রুটির
স্থান নেই!
নাকি আপনি
আল্লাহার বিধানকে
ত্রুটিযুক্ত মনে
করেন?
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন