বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬

পবিত্র কুরআন স্পর্শ করার জন্য অজুর "ফরয বা রুকন নয়"

জাকির নায়েকের নামে তোলা মিথ্যা অপবাদের জবাব

""পবিত্র কুরআন স্পর্শ করার জন্য কোনো অজুর "ফরয বা রুকন নয়"""

________________________________________________________________________

ডঃ জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে
লা মাযহাবী লিডার আবু হানিফা
এর অনুসারী দেওবন্দী, বেরোল্ভী, নামধারী নাস্তিক ও ইহুদি খ্রিস্টানদের এজেন্টদের তোলা প্রচারিত অভিযোগের
সবচেয়ে শক্তিশালী অভিযোগ
" পবিত্র কুরআন স্পর্শ করার জন্য কোনো অজুর "ফরয বা রুকন নয়""

এর দলীল ভিত্তিক খন্ডন নিচে করা হলো :

________________________________

অভিযোগ খন্ডন এবং জবাব :

প্রথম কথা বিষয়টি একতেলাফী।

কাজেই যদি জাকির নায়েককে এ বিষয়ে কটাক্ষ করা হয় তাহলে তাদেরকে করতে হবে যারা এর পক্ষে
......... মানুষের বেশিরভাগ সময় অজু থাকে না।আর যদি অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা না যায় তাহলে বেশিরভাগ সময় কুরআন পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

আর কুরআন পড়া থেকে বিরত রাখা শয়তানের কাজ।

যারা বলে অজু ছাড়া কুরআন পড়া যাবে না তারা সূরা ওয়াক্বিয়ার ৭৯ নং আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে থাকেন।

আয়াতটি নিম্নরূপ ﻻَ ﻳَﻤَﺴُّﻪُ ﺇﻻَّ ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭْﻥ َ. আয়াতখানির মূল শব্দ (Key words) হচ্ছে তিনটি।
যথা-মাস্ ( ﻣَﺲٌّ )=স্পর্শ করা/ ধারে কাছে আসা, উপলব্ধি করা,
হু ( ﻩُ ) = ঐ
এবং মুতাহ্হারুন ( ﻣُﻄَﻬَّﺮُﻭْﻥَ )=পাক- পবিত্র।
মূল শব্দ তিনটি অপরিবর্তিত রেখে আয়াতখানির সরল অর্থ দাঁড়ায়
“মুতাহ্হারুন (পাক- পবিত্র) ব্যতীত ঐ কুরআন কেউ মাস্ (স্পর্শ) করতে পারে না।”

আগের দুটি আয়াত সহ দেখলে অর্থ হয “নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন, যা আছে এক সুরক্ষিত গোপন কিতাবে, যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ ঐটি স্পর্শ করতে পারে না।” (৫৬:৭৭-৭৯)

এখানে যে কুরআনের কথা বলা হয়েছে তা পৃথিবীর কুরআন নয়, এটা লাওহে মাহফুজের কুরআন।
আর পাক-পবিত্র বলতে ফেরেস্তাদেরই বুঝানো হয়েছে।
কারন,
________________
১. যখন এই আয়াতগুলি নাজিল হয় তখন সম্পুর্ন কুরআন নাজিল হয় নি। তাই পৃথিবীর কুরআন এই আয়াত গুলিতে উল্লেখিত সুরক্ষিত গ্রন্থ হতে পারে না।

________________
২. “( ﻩُ )=ঐ” দ্বারা দুরবর্তী সংরক্ষিত কুরআন বুঝিয়েছে। আর দুরবর্তী সংরক্ষিত কুরআন হচ্ছে লাওহে মাহফুজের কুরআন।

________________
৩. এখানে “স্পর্শ করো না” উল্লেখ নেই। উল্লেখ আছে “স্পর্শ করতে পারে না”।

পৃথিবীর কুরআন যে কেউ স্পর্শ করতে পারে।

তাই ঐটি পৃথিবীর কুরআন নয় লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত কুরআন।

এই আয়াতে ‘মুতাহ্হারুন’ শব্দের অর্থ ইবনে কাছির ও আশরাফ আলী থানবী এর মতে ‘নিষ্পাপ ফেরেস্তা’,

মুফতি শফীর মতে বিপুল সংখ্যক সাহাবী,তাবেয়ী অনুযায়ী এটা হবে ‘নিষ্পাপ’,

মউদুদীও একে ‘নিষ্পাপ’ অনুবাদ করেছেন।

তাই কুরআন স্পর্শ করতে বা পড়তে অজু কোনও বিষয় নয়।

যারা মানেন তাদের জন্য নিচে দুটি হাদিসও উল্লেখ করছিঃ

“ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। একদা রাসূল (সা.) শৌচাগার হতে বের হয়ে আসলে তাঁর সামনে খাবার উপস্থিত করা হল। তখন লোকেরা বলল, আমরা কি আপনার জন্যে অজুর পানি আনব না? তিনি বললেন, যখন নামাজের প্রস্তুতি নিব শুধু তখন অজু করার জন্যে আমি আদিষ্ট হয়েছি।” (তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী)

“আলী (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) পায়খানা হতে বের হয়ে বিনা অজুতে আমাদের কুরআন পড়াতেন এবং আমাদের সঙ্গে গোশত খেতেন। তাঁকে কুরআন হতে বাধা দিতে পারত না বা বিরত রাখত না জানাবাত (গোসল ফরজ) ব্যতীত অন্য কিছু।” (আবু দাউদ, নাছায়ী ও ইবনে মাজাহ)

উপরোক্ত আয়াতের প্রকৃত অর্থ দাঁড়ায় [৫৬:৭৯] যারা আন্তরিক তারা ব্যতিত কেউই এটা উপলদ্ধি করতে পারে না।

আন্তরিকতাহীন যারা সন্তষ্ট নয় শুধুমাত্র কুরআনে তারা ঐশ্বরিকভাবে কুরআন বুঝা থেকে প্রতিরোধ প্রাপ্ত হয়। এই ধারনা কুরআনে বারবার দেওয়া হয়েছে (১৭:৪৫-৪৬,১৮:৫৭) ।

ফলে তারা এই আয়াতটিও বুঝতে পারে না। ৭:৩,১৭:৪৬,৪১:৪৪ , এবং ৫৬:৭৯ এর অনুবাদস্বমূহ মিলিয়ে দেখুন।

তাই অজুর অজুহাতে কুরআন থেকে দূরে থাকার অর্থই হয় না।

[কপি করা ও শেয়ার করা যাবে]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন