বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৫

ইন্ডিয়া কি কি কাজে সেরা আসুন জেনে নেইঃ

ইন্ডিয়া কি কি কাজে সেরা আসুন জেনে নেইঃ ১. দেশের বেশিরভাগ [৫০%] মানুষ খোলা আকাশের নিচে পায়খানা করে। (BBC) ২. পুত্র সন্তানের আশায় ইন্ডিয়াতে প্রতি চারটি নারী ভ্রূণের মধ্যে একটি নষ্ট করে ফেলা হয়। ৩. দিল্লিকে "ধর্ষণের নগরী" বলা হয় (CNN) ৪.ইন্ডিয়ার ৬০% মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। ৫. সমকামিতা , মদ এবং লেসবিয়ানিজম সামাজিকভাবে বৈধ (প্রথম আলো) ৬. পর্নস্টারকে (সানি লিয়ন) সামাজিকভাবে সম্মাননা দানকারী একমাত্র রাষ্ট্র (নয়া দিগন্ত) ৭.মুম্বাইকে পশ্চিমা বিশ্বে বলা হয় "সস্তা পতিতার নগরী" = "সিটি অফ চিপ টার্ট" (BBC) ৮. বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বস্তি ইন্ডিয়াতে (Hollywoodএবং Fox) ৯. পৃথিবীতে প্রতি বছর মোট ধর্মীয় দাঙ্গার ৫৭% ঘটে শুধু ইন্ডিয়াতে (Oxford University) ১০. ভারত এমন এক দেশ যার কোনো প্রতিবেশীর সাথে ভালো সম্পর্ক নেই। (সিনহুয়া,রয়টার্স) Copied

মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫

মাগরিবের আজানের পর ফরজ নামাযের আগে কোন নফল নামায পড়া নিষিদ্ধ।

মাগরিবের আজানের পর ফরজ নামাযের আগে কোন নফল নামায পড়া নিষিদ্ধ।

আহলে হক (আহলে টক) মিডিয়া

থেকে সাম্প্রতিক একটি প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়েছে

-----------------------------------------------------------------------------------

মাগরিবের আজানের পর ফরজ নামাযের আগে কোন নফল নামায পড়া নিষিদ্ধ। তবে প্রত্যেক নামাযের আজান ও ইকামতে মাঝামাঝি সময়ে দুই রাকাত নামায পড়া নফল। আবশ্যক নয়। শুধু মাগরিব নামাযের ক্ষেত্রে হাদীসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। অর্থাৎ মাগরীবের আজান দিলে ফরজের আগে অন্য কোন নামায নেই।

-----------------------------------------------------------------------------------

দলিল দিয়েছেনঃ عَن عَبد اللَّهِ بْنِ بُرَيدة، عَن أَبيهِ، رَضِي اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ النَّبيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّم قَالَ: بين أَذَانَيْنِ صَلاةٌ إلاَّ الَمْغَرِبَ. হযরত আব্দুল্লাহ বিন বারিদাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-প্রতিটি দুই আজান [আজান ও ইকামত] এর মাঝে [নফল] নামায আছে মাগরিব নামায ছাড়া। {মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৪৪২২,আলমুজামুল আওসাত,হাদীস নং-৮৩২৮,সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১০৪০, সুনানে কুবরা বায়হাকী, হাদীস নং-৪১৭২}

-----------------------------------------------------------------------------------

  • • সনদের রাবী হিয়ান বিন আব্দুল্লাহ আল-আদী সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী বলেন, ‘তিনি শক্তিশালী নন’। (আল-সুন্নান ১/২৬৫)


মুহাদ্দিছগনের মন্তব্যঃ

  • • উক্ত হাদীছ সম্পর্কে আলবানী (রহঃ) দাঈফ আল-জামে (২৩৬২) তে বলেছেন ‘দাঈফ’। এছাড়াও তিনি হাদীসটিকে ‘মুনকার’ বলেছেন (সীলসীলা দাঈফাহ ২১৩৯)।


  • • ইমাম হায়শামী মাজমু আল-জাওয়ায়েদ (২/২৩৪) এ বলেছেন সনদের হিয়ান বিন আব্দুল্লাহ , ইবন আদী এনাকে উল্লেখ করে বলেন এনার মধ্যে সংমিশ্রণ আছে।


  • • ইবন হাজার আসকালানী ‘ফাতহুল বারী’ (২/১২৮)এ বলেছেন ‘কিন্তু মাগরিব অংশটি অতিরিক্ত’।


  • • ইবন হাজম ‘আল-মুহাল্লা’ (২/২৫৩) তে বলেছেন ‘হিয়ান বিন আব্দুল্লাহ এর নিজস্ব কথা, যিনি ‘মাজহুল’।


  • • ইবনু মুলাকিন ‘শারহ বুখারী ইবনু মুলাকিন’ (৬/৪৬) এ বলেছেন, ‘এর সনদে আছেন হিয়ান বিন আব্দুল্লাহ, ইবন হাজম বলেছেন এটি হিয়ান বিন আব্দুল্লাহ এর নিজস্ব কথা, যিনি ‘মাজহুল’।


  • • আহমাদ শাকির ‘আল-মুহাল্লা’ (২/২৫৩) তে বলেছেন ‘দাঈফ'।


বিঃদ্রঃ আলবানী (রহঃ) এর তাহক্কিক মানতে না চাইলে তারটা বাদ দিয়ে বাকিদের মানুন

বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫

কোনটা সরল পথ ??? মাযহাবীদের পোষ্টমর্টেম পার্ট নয় ____ (৯)

কোনটা সরল পথ ??? মাযহাবীদের পোষ্টমর্টেম পার্ট নয় ____ (৯) ============ মাযহাবী হানাফিরা বলে থাকে এই কথা/উক্তিটা """চার মাযহাব বলে সিরাতে মুস্তাকিম থেকে বের হয়েছে আবার মিলবে!!!!"" [চিত্র ৪নং

Click This Link

Click This Link

Click This Link

এবং ৫নং

Click This Link

] কিভাবে???? পরিস্কর ভাবে বলুন কেনই বা বের হয়েছে ?? আবার এরা বলে ""এই চার মাযহাব বলে একত্র হবে"" যা কোন ভাবে মিলিত হওয়া সম্ভব না [চিত্র ৩

Click This Link

এবং ৫নং

Click This Link

] সিরাতে মুস্তাকিম সোজা একটা পথ [চিত্র ২

Click This Link

] কিন্তু এটা থেকে যদি আরো চারটি সোজা পথ [চিত্র ৪

Click This Link

] বের হয় , কিভাবে তা আবার সোজা পথ হবে, না তা হবে বক্র পথ [চিত্র ৫

Click This Link

চারটি সরল পথ কখনো একটি সরল পথে গিয়ে একত্র হতে পারবে না। কারণ একটি সরল রেখা অপর কোন সরল রেখাকে ছেদ বা মিলিত হবে না। তার সমান্তরাল ভাবে চলবে এটা সরল পথ বা রেখার ধর্ম ॥ [চিত্র ১

Click This Link

এবং ৩

Click This Link

] তাই এই মাযহাবীদের প্লে -শ্রেণীতে পড়াতে হবে!!! চার মাযহাব চারটি সোজা পথ [চিত্র ১

Click This Link

] সিরাতে মুস্তাকিম একটি সোজা পথ [চিত্র ২

Click This Link

] এই চার মাযহাব চার পথ এবং সিরাতে মুস্তাকিম পাশাপাশি হল পাঁচটি সোজা পথ [চিত্র ৩

Click This Link

] মাযহাবীদের কথা মত, সিরাতে মুস্তাকিম থেকে বের হয়েছে এবং মিলিত হয়েছে [চিত্র ৫

Click This Link

] তাহলে এই চার মাযহাবের চারটি পথ কি সোজা থাকলো [চিত্র ৪

Click This Link

এবং ৫

Click This Link

] এই মাযহাবী পথগুলো হল বক্র পথ বা বক্র রেখা [চিত্র ৪

Click This Link

Click This Link

Click This Link

এবং ৫

Click This Link

] আর রাসূল সাঃ বলেছেন সিরাতে মুস্তাকিমের আশেপাশে বক্র পথের মাথায় এক একটা করে শয়তান দাড়িয়ে আছে আর ডাকছে তার দিকে॥ মাযহাব মানেই বক্র পথ আর মাযহাবের মাঝে যত সব বক্রতা রয়েছে ॥ এই মাযহাব আল্লাহ দেওয়া দ্বিন ইসলামকে টুকরো টুকরো করেছে॥

সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫

ওরা আবু হানীফার অনুসারী না, শয়তানের অনুসারী!!!

ওরা আবু হানীফার অনুসারী না, শয়তানের অনুসারী!!!

===================

দুঃখের বিষয়, ব্যক্তি নুমান ইবনে সাবিত (আবু হানীফা) রঃ এর সাথে বর্তমানে প্রচলিত ঊনার নামে তৈরি মাযহাবের কোন মিল পাচ্ছি না! অদ্ভুদ!

বড়ই আফসোস নব্য ভন্ড মাযহাবীদের জন্য!

আজ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারবে না, নুমান ইবনে সাবিত (আবু হানিফা) রঃ বর্তমানের হানাফীদের মতো;

  • মিলাদ-কিয়াম করেছে!!


  • টাকার বিনিময় কুরআন তেলওয়াত-খতম পড়েছে!!


  • খতমে খাজেগানে, খতমে ইউনুস!!


  • দুরুদে নারিয়া, দুরুদে তাজ!!


  • ইলাল্লাহ জিকির!!


  • ছয় লতীফার জিকির, হালকায়ে জিকির!!


  • মানুষ মরলে তিন (৩) দিন, চলিশ্শা ইত্যাদি!!


বিদ'আত কাজ তিনি কখনো করেছেন??

  • এমন কি পীর-মুরিদ!!


  • তাবিজ-কবজ!!


  • কবর- মাজার ব্যবসা!!


ঊনি করেছেন??

সুতরা যারা এসব কাজ করে আবার হানাফি মাযহাবি দাবি করে;

আমি চ্যালন্জ করে বলতে পারি, এরা ব্যক্তি আবু হানীফা (রহঃ) এর দূশমন, সাহাবায়ে কেরাম (রাযিঃ) এর দূশমন, বিশ্বনবি সাঃ এর দূষমন, ইসলামের চরম দূশমন!! এবং ওরা আবু হানীফা (রহঃ) অনুসারী নয়, বরং শয়তানে অনুসারী!!!

রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫

প্রশ্ন- লেডিস মাযহাবী কারা?

প্রশ্ন- লেডিস মাযহাবী কারা?

"হানাফি" নামক ""সংঙ্কর হানাফি ধর্মের "" , লা~মাযহাবী (নুমান ইবনে সাবিত রঃ) অনুসারী আমাদের বলে লা~মাযহাবী॥

তাই আমরা একই সাথে চার ইমামকে মানতে পারি ও মানি।

আর একজন পুরুষ একই সাথে চারটা বউ রাখতে পারে।

"সংঙ্কর হানাফি ধর্মের" , লা~মাযহাবী (নুমান ইবনে সাবিত রঃ) অনুসারী একজন ইমামকে মানতে পারেন। বাকি তিনজনকে মানা তাদের জন্য হারাম।

আর একজন মহিলা একটা হাজবেন্ড রাখতে পারে। বাকি তিনটা রাখা হারাম।

প্রশ্ন- লেডিস মাযহাবী কারা?

  • এই হানাফি মাযহাবের (সংঙ্কর হানাফি ধর্মের) নাম রাখাই হয়েছে একটা নারীর নামে


""হানাফি"" নামক ""সংঙ্কর হানাফি ধর্ম"" এর অনুসারীদের "হানাফি মাযহাব"এর সাথে ইমাম নুমান ইবনে সাবিত রহঃ এর কোন সম্পর্ক নেই ॥



কারণ তিনি এই মাযহাব তৈরি করে যান নি॥

  • জয় হানাফি লেডিস মাযহাব


শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৫

ঐ লোকদের রাস্তার অনুসরণ কর যারা আমার দিকে ঝঁকে আছে।

মাযহাবী পোস্টমর্টেম পার্ট ৩
================ *মাযহাবী আলেমরা দলীল দেন " মহান আল্লাহ্ বলেন, “ঐ লোকদের রাস্তার অনুসরণ কর যারা আমার দিকে ঝঁকে আছে।” -সূরা লুকমান (৩১), ১৫।

এই আয়াত থেকে বুঝা যায়, আল্লাহ্ ওয়ালাদের তাক্বলীদ (অন্ধ অনুসরণ) করতে হবে।

জবাব :

  • এই ব্যাখ্যাটি মারাত্মক বিভ্রান্তিকর। কারণ মাযহাবীরা আয়াতের প্রথম অংশটি উল্লেখ করেননি।


¤আয়াতটি লক্ষ্য করুন-

সূরা: Luqman (Luqman) মক্কায় অবতীর্ণ সূরা নং: ৩১ ==== 15. ﻭَﺇِﻥ ﺟَﺎﻫَﺪَﺍﻙَ ﻋَﻠَﻰٰ ﺃَﻥ ﺗُﺸْﺮِﻙَ ﺑِﻲ ﻣَﺎ ﻟَﻴْﺲَ ﻟَﻚَ ﺑِﻪِ ﻋِﻠْﻢٌ ﻓَﻠَﺎ ﺗُﻄِﻌْﻬُﻤَﺎۖ ﻭَﺻَﺎﺣِﺒْﻬُﻤَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻣَﻌْﺮُﻭﻓًﺎۖ ﻭَﺍﺗَّﺒِﻊْ ﺳَﺒِﻴﻞَ ﻣَﻦْ ﺃَﻧَﺎﺏَ ﺇِﻟَﻲَّۚ ﺛُﻢَّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣَﺮْﺟِﻌُﻜُﻢْ ﻓَﺄُﻧَﺒِّﺌُﻜُﻢ ﺑِﻤَﺎ ﻛُﻨﺘُﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ পিতা- মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহ অবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো।

  • আয়াতটির প্রতি গভীরভাবে লক্ষ্য করুন,


বলা হয়েছে পিতা মাতা আল্লাহর সাথে শিরক করতে বললে তাদের কথা মান্য করা যাবে না।

¤বরং যারা আল্লাহ্’র পথে চলে তাদের কথা মানতে হবে।

¤অর্থাৎ যারা আল্লাহ্’র সাথে শিরক বা কুফরীমূলক কথা বলে না তাদের কথা মানতে হবে।

এখন কার কথা শিরক বা কুফরী তা বুঝবেন কি করে?????

*এটা বুঝতে হলে কুরআন বা হাদিসের দলিল সহ কারে যারা কথা বলে তারাই মূলতঃ আল্লাহ’র পথে রয়েছেন।

যদি বিনা দলিলে কারো কথা মানা হয় অর্থাৎ অন্ধ তাক্বলীদ করা হয় তাহলে আপনি কিভাবে বুঝবেন তার বক্তব্য কি শিরক- কুফর হয়েছে না’কি সঠিক হয়েছে?

এটা বুঝতে হলে অবশ্যই তাদের কথা যাচাই করে নিতে হবে।

যাচাই বাছাই করলে সে মুক্বালিদ থাকে কি??

¤এই আয়াত দ্বারা কোন ভাবে একক ব্যক্তির (তাক্বলিদে শাখসী -এক জন মৃত ইমাম এর অনুসরণ) প্রমাণিত হয় না।

¤ তাহলেই যাচাই বাছাই করলে বুঝা যাবে কে আল্লাহ্’র পথে রয়েছে। তা’না হলে বুঝা সম্ভব নয়।

¤ অতএব, আয়াতটি কোন ভাবেই অন্ধ তাক্বলীদের পক্ষে বলা হয় নি

তাফসীরে ইবনে কাসিরে َّ "" ﻣﻦﺃَْ َﻧﺎﺏﺇََ ِﻟﻲ "" এর তাফসিরে মু'মিন গণ কে বলা হয়েছে ।

""মু'মিনগন"" কি এক বচন না বহু বচন ?

¤ বহু বচন হলে মৃত একক ব্যক্তি ইমাম আবু হানিফা রঃ এর অন্ধ তাক্বলিদ প্রমাণিত কি ভাবে হয় বলেন?

আল্লাহ আমাদের অন্ধ তাকলীদ হতে হেফাজত করুক।

§ Md Sarower Hossain §

"বাউল মতবাদ"

বাউল মতবাদের মুলে রয়েছে স্রষ্টার সর্বেশ্বরবাদ (Pantheism) যা কুফরী।

[[[[ বিঃদ্রঃ শয়তান এই বাউলদের ভন্ডামী তুলে ধরার জন্য লেখা ] [ইসলাম ধর্মে এই বাউলদের কোন স্থান নেই ] [এই লেখায় যে কথাগুলো ইসলাম বিরুদ্ধী তা আমার পক্ষ থেকে না MD SAROWER ]]]]

বাউলরা মানুষ এবং সৃষ্টিকর্তাকে অভেদ জ্ঞান করেন। এরা বাহ্যিক কোন ধর্মীয় আচার আচারনে বিশ্বাসী নন। তাদের নেই কোন শাস্ত্রীয় পুস্তক।

বাউলের অসংখ্য গানের মধ্যে তাহা প্রকাশিত।

বাউল মতে, দেহের মধ্যেই বাস করেন পরম পুরুষ।তাকে পেতে দরকার দেহ-সাধনা।

পণ্ডিতদের অনেকের মতে, বাউল শব্দের অর্থ উন্মাদ বা পাগল। শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ 'বাতুল' থেকে। কারো মতে, 'বাউর' (বিশৃঙ্খল) কিংবা 'ব্যাকুল' শব্দ থেকে শব্দটির উৎপত্তি। অন্যমতে।

এটি 'আউয়াল' বা 'আউলিয়া' শব্দের অপভ্রংশ।

আরেক মত, গ্রাম্য উল অর্থ সন্ধান বা অর্থ সঙ্গে। দু'য়ে মিলে বাউল। অর্থাৎ 'সন্ধানের সঙ্গে বর্তমান'।

সংস্কৃত শব্দ 'বাউলা' 'বাউরার' অপভ্রংশও মনে করেন কেউ কেউ।

সাধারনভাবে ধর্মীয় শাস্ত্রাদি ও সামাজিক প্রথা ত্যাগ করে উদাসীনতা ও উন্মাদভাবের আশ্রয় নেওয়ার জন্য এদের অভিহিত করা হয় 'বাউল' নামে।

বাউল তত্ত্বের আদর্শ সমূহ - ১। গুরুবাদ ২। শাস্ত্রহীন সাধনা ৩। দেহতত্ত্ব ৪। মনের মানুষ ৫। রুপ স্বরূপ তত্ত্ব

১।গুরুবাদ- গুরু হচ্ছেন শিক্ষক, পরামর্শদাতা, পথ প্রদর্শক, মুর্শিদ। তিনি মানব গুরু এবং পরম পুরুষ দুই-ই। তাকে ঘিরেই গুরুতত্ত্ব । যেমন গুরু সম্পর্কে লালনের সহজ সরল স্বীকারোক্তি -- 'যেই মুর্শিদ সেই তো রাসুল, ইহাতে নাই কোন ভুল, খোদাও সেই হয়; লালন কয় না এমন কথা, কোরানে কয়।।' 'মুর্শিদ বিনে কি ধন আছে রে এই জগতে? মুর্শিদ চরন সুধা, পান করিলে হবে ক্ষুধা; করোনা দেলে দ্বিধা। যে মুর্শিদ, সেই খোদা ...... ' 'জান গে যা গুরুর দ্বারে, জ্ঞান উপাসনা কোন মানুষের কেমন কীর্তি, যাবে রে জানা ................ '

২।শাস্ত্রহীন সাধনা- বাউলরা মনে করে আনুষ্ঠানিক ধর্মীয় আচার পালন করে 'মনের মানুষ' পাওয়া যায়না। রীতি নীতি বিধান- বিহিতে কিছু নেই। তাই লালন গেয়ে উঠে .... 'কার বা আমি কেবা আমার, আসল বস্তু ঠিক নাহি তার, বৈদিক মেঘে ঘোর অন্ধকার, উদয় হয়না দিনমণি ...... ' 'সত্য কাজে কেউ নাই রাজি সবই দেখি তা না না না জাত গেলো জাত গেলো বলে এ কি আজব কারখানা ...... ' 'বেদ বিধির আগোচর সদাই কৃষ্ণপদ্ম নিত্য উদয়, লালন বলে মনের দ্বিধায় কেউ দেখেও দেখেনা .................. '

৩।দেহতত্ত্ব- বাউল সাধকদের সাধনা দেহে উপর আশ্রয় করে গড়ে উঠে। কারন ঈশ্বর দেবতা সবই কাল্পনিক, মানুষের বিশ্বাস বিশেষ। সাধারন মানুষের জন্য এগুলো প্রতীক মাত্র। আসলে 'পরম পুরুষ' বাস করেন শরীরে। তাই শরীরের সাধন শ্রেষ্ঠ সাধন। বৈষ্ণব কবি চণ্ডীদাস বলেছেন -- 'সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই' । সেই সুত্রে ধরে বাউল কর্তারা রচনা করেছেন -- 'কুতবি যখন কফের জ্বালায়,তাবিজ তাগা বাধবি গলায় তাতে কি আর হবে ভালাই, মস্তকের জল শুষ্ক হলে .........' 'আদি মক্কা এই মানবদেহে, দেখ নারে মন ভেয়ে, দেশ - দেশান্তর দৌড়ে কেন মরছোরে হাঁপিয়ে .................' 'দেহের খবর যে জন করে, আলেক বাজি সে দেখিতে পারে আলেক দম হাওয়ায় চলে, কি আজব কারখানা ............... '

৪।মনের মানুষ- মনের মানুষ হচ্ছে দেহস্থিত আত্মা। আত্মাই বহুনামের মানুষ - ভবের মানুষ, রসিক মানুষ, সোনার মানুষ, আলেক সাঁই ইত্যাদি। লালন তাকে স্মরণ করেন - 'এই মানুষে আছেরে মন,যারে বলে মানুষ রতন। লালন বলে পেয়ে সে ধন, পারলাম নারে চিনিতে .......... ' 'আত্মতত্ত্ব না জানিলে ভজন হবেনা, পড়বি গোলে আগে জানগা কালুল্লা, আয়নাল হক আল্লা, যারে মানুষ বলে পড়ে ভূত এবার, হসনে মন আমার, একবার দেখনা প্রেমনয়ন খুলে। আপনি সাঁই ফকির, আপনি ফকির, ও সে লীলার ছলে ........ ' 'মুন্সী ও মৌলভীর কাছে, জনম ভর সুধাই সে, ঘোর গেলো না। পড়ে নেয় পরের খবর, আপন খবর কেউ বলেনা ......... '

৫।রুপ-স্বরূপ তত্ত্ব- দেহ বা কান্তি চেতনাই সব। রুপ হচ্ছে নারী বা প্রকৃতি আর স্বরূপ হচ্ছে নর বা পুরুষ। রুপ এবং স্বরূপ এর দৈহিক মিলনেই সাধন সম্পূর্ণ হতে পারে। রুপ - সরূপ এর ভবের তাৎপর্য বুঝার জন্য হলেও তাদের মিলনের প্রয়োজন। মূল বাউল তত্ব এর কোন জাত বিচার নেই। শ্রেণীহীন সহজ সরল জীবনের অভিসারী বাউলরা সর্বেশ্বরবাদ , ত্যাগের আদর্শবাদী। কিন্তু সেই সর্বেশ্বরবাদ সত্ত্বা মানেই আল্লাহ, ভগবান, ঈশ্বর কিংবা প্রচালিত কোন সৃষ্টিকর্তা হতেই হবে এমন কোন বাধ্য নিয়ম নেই, অনেক বাউল-ই Mysticism বা অতীন্দ্রিয়বাদে বা অদৃশ্য সত্ত্বায় বিশ্বাসী যাকে কোন নিদিষ্ট সৃষ্টিকর্তার আওতায় ফেলাকে এক অর্থে অসম্ভব ব্যাপার।

কোন কোন বাউল সম্প্রদয়ের মতে, বাউল সাধনায় 'দেহ সাধনা' প্রধান বলেই নর-নারীর আঙ্গিক মিলন অপরিহার্য। এ হচ্ছে যুগল সাধনা। যুগল সাধনা দুই প্রকার - স্বকীয়া এবং পরকীয়া। তবে পরকীয়া বেশি প্রার্থিত।

বাউলদের মতে 'পঞ্চরস' পান না করলে প্রকৃত সাধক হওয়া যায়না।

পঞ্চরসের উপকরন হচ্ছে - মল, মুত্র, ঋতুরক্ত, রতিজনিত স্ত্রী-পুরুষের ক্ষরিত রস ও বীর্য।

যুগল সাধনার ক্ষেত্রে বাউল স্বকীয়া তথা স্ত্রীকেই সাধারণত সাধন-সঙ্গিনী করে।।