সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬
মা
بسم الله الرحمن الرحيم
"মা"
কুরআনের ভাষায় -
ووصينا الانسان بوالديه احسانا
)আনকাবূত -৮(
"মা" কথাটি হৃদয়বীণার সবগুলো তারে টোকা দেয়ার সামর্থ্য রাখে।"মা" যিনি হৃদয়ের গভীরের সর্বোচ্চ স্রোত।একটি শর্তহীন ভালবাসার নাম।
"মা" হচ্ছেন একজন পূর্ণাঙ্গ নারী,যিনি গর্ভধারণ,সন্তানের জন্ম,সন্তানকে লালন-পালন,উত্তমচরিত্র গঠন,সর্বোপরি অভিভাবকের ভূমিকা পালনে সক্ষম। "মা" এমন একটি শব্দ,যে শব্দটি এক সর্গীয় পূণ্যতায় হৃদয়-মনকে অমিয় সুধায় প্লাবিত করে।বাংলা ভাষায় প্রথম শব্দ "ওম"।যার প্রচলিত রুপ "মা"।'ম' ধ্বনিটি সবচেয়ে সহজবোধ্য।পৃথিবীতে যতগুলো প্রসিদ্ধ ভাষা রয়েছে প্রায় সব ভাষায় 'ম' ধ্বনিটি বিদ্যমান।যেমন- ইংরেজীতে Mother, আরবীতে উম্মুন,হিন্দী আম্মা,উর্দূ আম্মি ইত্যাদি।
"মা"যদি কল্যাণকামী না হতেন তবে মানবসভ্যতার চাকা শ্লথ হয়ে যেতো।সন্তানের প্রতি মায়ের এই তীব্র মমতার ব্যাখ্যায় বিজ্ঞান বলে, মায়ের দুধে এক প্রকার রাসায়নিক যৌগিক পদার্থ আছে,যা সন্তানের দেহে প্রবেশ করলে মা ও সন্তানের মধ্যে সৌহার্দ্যের নিবিড় বন্ধন সৃস্টি হয়।মায়ের ভালবাসার ক্ষমতা বিজ্ঞানের মাপকাঠিতে নির্ণয় সম্ভব নয়।ইসলাম ধর্মে মাকে দেয়া হয়েছে অতুলনীয় মর্য্দা।হযরত আসমা বিনতে আবু বকর )রা.( থেকে বর্ণিত,বুখারী শরীফে সংকলিত হাদীসে "মা" মুশরিকা হলেও তাঁর সাথে ভালো ব্যাবহার করতে রাসূল )স.( নির্দেশ দিয়েছেন।
মাকে শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানানোর নির্দিষ্ট কোনো দিন নেই।মায়ের প্রতি ভালবাসা সর্বমুহূর্তের।তবুও মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার "মা" দিবস পালিত হয়ে আসছে।আবু হুরায়রা )রা.( থেকে বর্ণিত বুখারী শরীফে চয়িত আনুগত্য বেশি পাওয়ার হকদার হিসেবে ক্রমান্বয়ে তিনবার রাসূল )স.( মা'র কথা বলেছেন।"মা" ছোট্ট শিশুর প্রথম ভালবাসা।মায়ের গর্ভ থেকে শুরু করে জন্মের পরেও তিল তিল করে নাড়িছেড়া ধনকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন "মা"। মায়ের হৃদয়ের প্রবাহমান রক্তকণিকায় রয়েছে সন্তানের জন্য ভালবাসা।"মা" মা-ই,তাঁর কোনো ভিন্নরুপ নেই - জন গে।
প্রেসিডেন্ট,উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা,ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ারবা নিচুতলার যে কেউ থাকুক সন্তানের কাছে তাঁর পরিচয় তিনি গর্ভধারিণী "মা"।নবী করীম )স.( ফাতেমা )রা.( কে মা বলে ডাকতেন এবং পরম শ্রদ্ধায় দুধ মা হালিমাকে চাদর বিছিয়ে দিতেন।একমাত্র মায়ের জন্যই অসুবিধার সম্মুখীন হলে ইসলাম নামাজ ত্যাগ করার অনুমতি দিয়েছে।মা'র দিকে অনুগ্রহের নজরে তাকালে প্রতিটি দৃস্টির বিনিময়ে কবুল হজ্বের সওয়াব পাওয়া যায়।একজন মা-ই তাঁর সন্তানের পক্ষ থেকে উত্তম আচরণ, সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য।
"This person is never poor,who has mother" - আব্রাহাম লিংকন।
এছাড়া মা সম্পর্কে নেপোলিয়ন এর বিখ্যাত উক্তি রয়েছে।প্রাণের প্রথম স্পন্দন থেকেই সন্তানের সঙ্গে মায়ের দেহ-মন-প্রাণ-আবেগ, অনুভূতির সম্পর্ক একসূত্রে গ্রথিত হয়ে যায়।সন্তানের জন্য মায়ের আশীর্বাদের স্নেহঝর্ণা প্রবাহিত হতেই থাকে।
বর্তমান সমাজে সন্তান দ্বারা মা নির্যাতন,হত্যারমত লোমহর্ষক ঘটনা ও বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধি ঘটছে।মায়ের প্রতি সঠিক হক আদায় মায়ের অধিকার নিশ্চিতকরণে আশাতীত সুফল বয়ে আনতে পারে।আল্লাহর বাণী-
واخفض لهما خناح الذل من الرحمة وقل رب ارحمهما كما ربياني صغيرا
বনী ইসরাইল-২৪
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেছেন-
মায়ের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে সন্তান যেন "উহ" শব্দটিও না বলে। মনের মাঝে সর্বোচ্চ আসনটি মায়ের জন্য বরাদ্দ রাখা এবং বার্ধক্যের একাকীত্বে সন্তানেরই উচিত মাকে সঙ্গ দেয়া।সর্বদা তাঁর খেদমতে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে।কবির ভাষায়-
"মায়ের আঁচল নিয়ে তোমরা যারা
আছো মা'র স্নেহের ছায়ায়
বুঝবে কি করে বলো মা ছাড়া এ জীবন
কত অসহায়,,,,,,,
মা
=মা=
আল্লাহ বলেন,
‘আমি মানুষকে তাদের মাতা-পিতার ব্যাপারে উত্তম আচরণের তাকিদ প্রদান করেছি। কেননা তার মা কষ্টের পর কষ্ট স্বীকার করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং দুই বছর পর সে বুকের দুধ খাওয়া ছেড়েছে। তুমি তোমার নিজের সৃষ্টির জন্য আমার শোকর আদায় করো এবং তোমার লালন-পালনের জন্য পিতা-মাতারও কৃতজ্ঞতা আদায় করো।’ (সূরা লুকমান, আয়াত নং-১৪)।
পবিত্র কুরআন মজিদের এ বর্ণনাভঙ্গিতে এটা সুস্পষ্ট হয় যে, মা সেবা, ভালবাসা, আনুগত্য, ভাল আচরণ ও কৃতজ্ঞতা পাওয়ার বেশি অধিকারী।
সাহাবী হজরত আবু হুরায়রা রা: হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একজন সাহাবী নবী করিম সা: এর কাছে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন আমার কাছে খেদমত পাবার সবচেয়ে বেশি হকদার কে?
রাসূলে করিম সা: বললেন তোমার মা।
-তারপর?
-তোমার মা।
-তারপর?
-তোমার মা।
-তারপর?
-তোমার পিতা এবং তারপর পর্যায়ক্রমে তোমার আত্মীয়-স্বজন।’(বুখারী, মুসলিম)
একবার এক ব্যক্তি রাসূলে করিম সা:-এর কাছে হাজির হয়ে অভিযোগ করল হে আল্লাহর রাসূল! আমার মা খারাপ মেজাজের মানুষ।
প্রিয় নবী সা: বললেন ‘নয় মাস পর্যন্ত অব্যাহতভাবে যখন সে তোমাকে পেটে ধারণ করে ঘুরে বেড়িয়েছে, তখনতো সে খারাপ মেজাজের ছিল না।’
-হজরত! আমি সত্য বলছি সে খারাপ মেজাজের।’
-তোমার খাতিরে সে যখন রাতের পর রাত জাগত এবং নিজের দুধ পান করাত, সে সময়তো সে খারাপ মেজাজের ছিল না।’
-আমি আমার মায়ের সেসব কাজের প্রতিদান দিয়ে ফেলেছি।’
-সত্যিই কি তুমি তার প্রতিদান দিয়ে ফেলেছ?’
-আমি আমার মাকে কাঁধে চড়িয়ে তাঁকে হজ করিয়েছি।’
-তুমি কি তাঁর সেই কষ্টের বদলা বা প্রতিদান দিতে পার, যা তোমার ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় সে স্বীকার করেছে?’
একবার হজরত জাহিমাহ রা: রাসূলে করিম সা:-এর খিদমতে হাজির হয়ে বললেন হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সাথে জিহাদে অংশগ্রহণ করাই আমার ইচ্ছা। এখন এ ব্যাপারে পরামর্শ গ্রহণের জন্য আপনার কাছে এসেছি, বলুন এ ব্যাপারে আপনার নির্দেশ কি?
-তোমার মা কী জীবিত আছেন?
-জ্বী, জীবিত আছেন।
-তাহলে তুমি ফিরে যাও এবং তার খিদমতেই লেগে থাক। কেননা তার পায়ের নিচেই জান্নাত। (ইবনে মাযাহ, নাসায়ি শরিফ)।
মায়ের খেদমতের গুরুত্ব সম্পর্কে সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: বলেছেন ‘আল্লাহর নৈকট্য এবং সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মায়ের সাথে উত্তম আচরণের চেয়ে বড় আমল আমার জানা নেই।’
মা যদি অমুসলিমও হয় তবুও তার সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে এবং তার সম্মান ও খেদমত করতে হবে।
হজরত আসমা রা: বলেন ‘রাসূল সা:-এর জীবিতাবস্খায় আমার মা মুশরিকা থাকাকালীন আমার কাছে আসে। আমি রাসূল সা:-এর খিদমতে আরজ করলাম
-আমার মা আমার কাছে এসেছে অথচ সে ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন। সে ইসলামকে ঘৃণা করে, এমতাবস্খায়ও কী আমি তার সাথে উত্তম ব্যবহার করব?
-অবশ্যই তুমি তোমার মায়ের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতে থাক।’ (সহিহ বুখারি শরিফ)।
পৃথিবীতে মায়ের খিদমত না করলে কিংবা মায়ের প্রতি কোনোরূপ খারাপ আচরণ করলে, মাকে কষ্ট ও দু:খ দিলে সন্তান যত ইবাদত-বন্দেগি আর নেকের কাজই করুক না কেন, তার পক্ষে জান্নাত লাভ করা কখনোই সম্ভব হতে পারে না।
পরিশেষে বলা যায়, মায়ের সন্তুষ্টি ও তার মমতাপূর্ণ অন্তরের দোয়া দীন ও দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য। পক্ষান্তরে দীন ও দুনিয়ার সবচেয়ে মারাত্মক দুর্ভাগ্য হলো সন্তানের প্রতি মায়ের দু:খ ভারাক্রান্ত হৃদয়ের বদদোয়া।
মা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
রচনাঃ মা
"আমি মানুষকে এই মর্মে নির্দেশনা দিয়েছি যে তারা যেন মাতা পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করে।তার মা কষ্ট করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছিল এবং কষ্ট করেই প্রসব করেছিল।তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধপান করাতে ত্রিশমাস লেগেছে....।"(সুরা আহকাফ ১৫)
সুরা লোকমান ১৪আয়াতে বলা হয়েছে_"আর প্রকৃতপক্ষে আমি মানুষকে মাতা পিতার হক চিনে নেবার জন্য নিজেই তাকিদ করেছি , তার মা দূর্বলতা সহ্য করে তাকে নিজের গর্ভে ধারণ করে এবং দু বছর লাগে তার দুধ ছাড়াতে, আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং নিজ মাতা পিতার প্রতিও।আমার দিকেই তোমাকে ফিরে আসতে হবে।"
মায়ের সেবার মর্যদাঃ
একদা রাসুল সাঃ জান্নাতে প্রবেশ করে কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ শুনেন , ফিরিশতা থেকে জানেন এটা হারিছা ইবনে নুমানের তিলাওয়াত।তখন রাসুল সাঃ বলেন , পূণ্যের প্রতিদান এমনই হয়,হারিছা ইবনে নুমান সকল মানুষের চেয়ে মায়ের সাথে সদাচরণকারী।(শরহে সুন্নাহ)
মায়ের সেবাই জিহাদঃ
মোআবিয়া রা বলেন আমার পিতা জামিমা রাসুল সাঃ খেদমতে হাজির হয়ে জিহাদে যাওয়ার পরামর্শ চান ,তখন রাসুল সাঃ বলেন,তোমার ঘরে মা আছে? তিনি বললেন হ্যাঁ।রাসুল সাঃ বললেন মায়ের সেবাকে অবলম্বন কর,জান্নাত তার পায়ের কাছে।(আহমাদ)
মায়ের মর্যদা বেশীঃ
একদা এক লোক রাসুল সাঃ কে জিজ্ঞেস করল আমার নিকট সবচেয়ে সদাচরণ পাওয়ার উপযোগী কে? তিনি বললেন,তোমার মা।আবার জিজ্ঞেস করল তারপর কে ? তিনি বললেন তোমার মা ।আবার বলল ,তারপর? তিনি বললেন,তোমার মা ।লোকটি আবার জিজ্ঞেস করল তারপর ? নবী সাঃ বললেন তোমার বাবা । (বুখারী)
মায়ের অবাধ্যতার পরিণামঃ
রাসুল সাঃ বলেন, উপকার করে খোঁটাদানকারী ,মাতাপিতার অবাধ্য সন্তান, সর্বদা মদ্যপায়ী জান্নাতে প্রবেশ করবেনা।(নাসায়ী)
রাসুল সাঃএর অভিশাপঃ
রাসুল সাঃ বলেন,তার নাসিকা ধুলায় মলিন হোক ,এভাবে তিনবার বললেন ।সাহাবাগণ বললেন কে সে? রাসুল সাঃ বলেন যে মা বাবাকে অথবা একজনকে বার্ধক্যে পেল অথচ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারলনা।(মুসলিম)
মা ই জান্নাত জাহান্নামঃ
একদা এক ব্যক্তি বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ সাঃ সন্তানের উপর মাতাপিতার হক কি ? রাসুল সাঃ বলেন তারা দুজনই তোমার জান্নাত জাহান্নাম ।(ইবনে মাজাহ)
মায়ের দিকে নেক দৃষ্টিঃ
রাসুল সাঃ বলেন কোন সদাচারী সন্তান নেক দৃষ্টিতে নিজের মাতাপিতার প্রতি তাকায় আল্লাহ তার প্রতিটি দৃষ্টির বিণিময় একটি কবুল (নফল) হজ্বের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করেন...(মিশকাত)
মায়ের অবাধ্যতার শাস্তিঃ
রাসুল সাঃ বলেন, প্রত্যেক পাপ আল্লাহ যতটুকু ইচ্ছা মাফ করে দেন কিন্তু মাতাপিতার অবাধ্যতার শাস্তি দুনিয়াতে মৃত্যূর আগেই প্রদান করেন। (মিশকাত)
পরিশেষে বলবো, মা ই আমার জান্নাত।আল্লাহ মালিক ,পৃথিবীর সব সন্তানকে মায়ের কদর বুঝার পাশাপাশি মায়ের খিদমাতের মাধ্যমে জান্নাতের উত্তম হকদার হ ওয়ার তৌফিকদান করুন ।আমীন ইয়া রাব্বে কারীম ।
মা
"মা"
কিছুই বুঝেনা, ব্যক্ত করতে পারেনা, কোনো শক্তি নেই
কিছু বলার ও বুঝার, ক্ষুধা পেলে শুধু কান্নাই যার ভাষা, এমন একটি শিশুকে হাজারো বাঁধা বিপত্তির পর্বতমালা পেরিয়ে, বহু ত্যাগ
তিতিক্ষার সাগর পাড়ি দিয়ে আঁচলে বাঁধা সুখের পরশে স্বযত্নে লালন-পালন করে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলা সেই মমতাময়ী নারীই হলেন মা। মা অতি ছোট্ট একটি শব্দ হলেও এর ভালবাসার বিশালতা সীমাহীন। পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর শব্দটি হচ্ছে মা। জগৎ সংসারের শত দুঃখ-কষ্টের মাঝে যে মানুষটির একটু সান্ত্বনা আর স্নেহ-ভালোবাসা আমাদের সমস্ত বেদনা দূর করে দেয় তিনিই হলেন মা। মায়ের চেয়ে আপনজন পৃথিবীতে আর কেউ নেই। দুঃখে-কষ্টে, সংকটে-উত্থানে যে মানুষটি স্নেহের পরশ বিছিয়ে দেয় তিনি হচ্ছেন আমাদের সবচেয়ে আপনজন মা। প্রত্যেকটি মানুষ পৃথিবীতে আসা এবং বেড়ে ওঠার প্রধান ভূমিকা মায়ের। মায়ের তুলনা অন্যকারো সঙ্গে চলে না। মা হচ্ছেন জগতের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ সবকিছুর উর্দ্ধে মা। মা মানে একরাশ অন্ধকারে এক বুক ভালবাসা, মা মানে সুন্দর জীবন, মা মানে সুন্দর জাতির উপহার। মা এমনই এক মমতাময়ী, চিরসুন্দর, চির শাশ্বত, যার নেই কোন সংজ্ঞা। মধু মিশ্রিত এক মহৌষধের নাম মা। ছোট্ট শিশুর প্রথম ভালবাসা, নিরাপত্তা আর মমতায় গড়া মায়ের কোল, সেই উষ্ণতার পরশে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিতে চায় মন। বড় হয়ে ওঠার সাথে
সাথে মা'কে ঘিরে জমা হয় ভালবাসা, অভিমান আর দুষ্টুমির শত
শত গল্প। সঙ্কটকালে কেবলই মনে হয় যদি সব কিছু ছেড়ে মা"য়ের স্নেহমাখা কোলে মুখ লুকাতে পারতাম, তবে পৃথিবীর কোন কষ্টই আমাকে স্পর্শ করতে পারতোনা। পৃৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মা। মায়ের পায়ের নিচে জান্নাত। মায়ের সেবা শুশ্রুষার দ্বারা জান্নাতের হকদার হওয়া যায়। বাবার তুলনায় ইসলাম মায়ের অধিকার অধিক ঘোষণা করেছে। প্রিয় নবী (সা.) পরিণত বয়সে মায়ের সান্নিধ্য পাননি। এ জন্য তিনি আফসোস করতেন। মায়ের সেবা করতে না পারার কষ্ট তার অন্তরে সর্বদা উপলব্দি করতেন। এ জন্য তিনি দুধমাতা হালিমা সাদিয়াকে (রা.) নিজের গায়ের চাদর বিছিয়ে
দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেছেন। সন্তানের জন্য মায়ের
এক রাতের কষ্টের বিনিময় আদায় করা যাবে না কোনোভাবেই। মায়ের সঙ্গে নম্র আচরণ, যথাসাধ্য সেবা শুশ্রুষা এবং কায়মনোবাক্যে তার প্রতিদানের জন্য প্রভুর দরবারে দোয়া করলে মায়ের হক যৎকিঞ্চিত আদায় হতে পারে। মা সন্তানের জন্য জান্নাতের পথ করে দেন। যে সন্তান মায়ের সান্নিধ্য গ্রহণ করার পাশাপাশি মাকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে তারাই সাফল্যের সন্ধান পেয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, 'আর তোমার পালনকর্তা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, তোমরা কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সুব্যবহার করবে। যদি তাদের মধ্যে একজন কিংবা দু’জনই তোমার কাছে বৃদ্ধ বয়সে অবশ্যই পৌঁছে যায়, তাহলে (তাদের খিটখিটে ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে) তাদের তুমি উহ্
শব্দও বলবে না এবং তাদের ধমকও দেবে না। আর তাদের সঙ্গে তুমি সম্মানজনক কথা বলবে এবং তাদের জন্য দোয়ার মধ্য থেকে নম্রতার বাহু ঝুঁকিয়ে দাও। সাহাবি আবু উমামাহ (রা.) বলেন, একজন লোক বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) সন্তানের ওপর পিতা-মাতার অধিকার কী? তিনি (সা.) বললেন, তারা দু’জন তোমার
জান্নাত ও জাহান্নাম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের আদর্শ মোতাবেক মায়ের মর্যাদা প্রদান করে জান্নাত অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬
চুড়ান্ত সিদ্ধান্তদাতা কি মুজতাহিদগন Lutfor Faraji Vs Ijharul Islam Al- kawsary
Lutfor Faraji Vs Ijharul Islam Al-
kawsary
একই Company বা ফিরকায় হানাফির দুই মুফতির বক্তব্য "" ইজতিহাদী মাসআলার চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে""
===========
এই ক্ষেত্রে Lutfor Faraji বলেছে, ""চুড়ান্ত সিদ্ধান্তদাতা নবী নয় মুজতাহিদগন""
অপর দিকে Ijharul Islam Al-kawsary বলেছে , "একইভাবে ইজতিহাদী মাসআলার ক্ষেত্রেও শরীয়তের নিদর্েশ হলো, মুজতাহিদ সাধ্য অনুযায়ী গবেষণা করবে। এক্ষেত্রে ভুল হলে এক সওয়াব। সঠিক হলে দু'সওয়াব।
মুজতাহিদকে প্রতে্যকটি মাসআলার চূড়ান্ত সত্য বের করার দায়িত্ব দেয়া হয়নি।
এজন্য ইজতিহাদী মাসআলায় নিজের গবেষণাকে চূড়ান্ত সত্য মনে করাটা 1:মূলত: নিজেকে আল্লাহ ও তার রাসূলের আসনে বসানোর শামিল।
##ইজতিহাদী মাসআলার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সত্যটি অজানা
আমার মন্তব্য: এত দেখি শত্রুর থেকেও বড় মহা শত্রু Lutfor Faraji Vs Ijharul Islam Al-
kawsary
দুই জনের আইডি লিংক দেওয়া হল
ID Link:
And
ID Link :
লেবেলসমূহ:
দেওবন্দী,
নাস্তিক,
পিরপুজারী,
মাযহাব,
লা মাযহাবী,
হানাফি,
Lutfor Faraji র ভান্ডামী
শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১৬
হানাফি ফিকাহ এর কিতাব"হিদায়া" হানাফিদের জন্য বিপদ
হানাফি ফিকাহ এর কিতাব"হিদায়া" হানাফিদের জন্য বিপদ
এর লেখক শত শত বছর পর ৫৯৩ হিজরীতে এসে "মার গানের অধিবাসী"বুরহানউদ্দীন মারগানী" হিদায়া নামক কিতাব রচনা করে ঘোষণা দিলেন:
"নিশ্চয় হিদায়া কিতাব খানা কুরআনের মতো"নিশ্চয় এটা তার পূর্ববর্তী রচিত সকল গন্থরাজীকে রহিত করে ফেলেছে"(নাউযুবিল্লাহ)(হিদায়া মুকাদ্দামা আখেরাইন-৩য় খন্ড)
"হানাফিদের কাছে কুরআনের মত"(হিদায়া ৩য় খন্ড ২য় ভলিউম পৃঃ ৪ আরবি। মাদ্রাসা পাঠ্য হিদায়াঃ ফাজিল পাঠ্য ভূমিকা পৃঃ ৬ আরাফাত পাবলিকেশন্স)
এই মতবাদের খন্ডন।
আল্লাহ তাআলা মানুষ ও জিনকে উদ্দেশ্য করে নিচের আয়াতে চ্যালেঞ্জ করেছে=
"আপনি বলে দিন,যুদি মানুষ এবং জ্বিন সকলে এ উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয় যে এ কুরআনের মতো (কুরআন) রচনা করে আনবে তথাপিও কুরআনের অনুরূপ আনয়ন করতে পারবে না,যুদিও তারা একে অন্যের সাহায্যকারী হয়"(সূরা বানী ইসরাঈল/ইসরা ১৭নং আয়াত ৮৮;)
সূরা হূদ ১১ আয়াত ১৩; সূরা বাকারাহ ২ আয়াত ২৩-২৪;
আলোচক মুফতি মীর মোয়াজ্জম হোসাইন সাইফী
হানাফি ফিকাহ এর কিতাব"হিদায়া" হানাফিদের জন্য বিপদ
কওমীদের জন্য ।
আবূ হানিফার (রঃ) জন্ম - ৮০ হিজরীতে ।
আল হিদায়া গ্রন্থ পরিচয় : এ গ্রন্থখানি মুখতাসারুল কুদূরীর ব্যাখ্যা ।লেখক হলেন আলী বিন আবী বকর । ব্যাখ্যা গ্রন্থকানি লেখা হয় ৫৯৩ হিজরীতে ।
মুখতাসারুল কুদূরীর (৫৯৩-৪২৮)=১৬৫ বছর পর ।মুখতাসারুল কুদূরীর লেখকের সাথে হিদায়ার লেখকের কোন দিন সাক্ষাত হয় নাই ।তিনি কোন দলিলের ভিত্তিতে কোন মাসআলাহ বলেছেন তা কোন প্রকারে তার নিকট হতে জানতে পারেন নাই ।তবুও মুখতাসারুল কুদূরীর বিরট ব্যাখ্যা তানি লিখেছেন ।
এই ব্যাখ্যার মূল্যায়ন হানাফীদের নিকট কুরআনের ন্যায় । হিদায়া ৩য় খন্ড,২য় ভলিউম পৃঃ ৪ আরবী ।মাদ্রাসার পাঠ্য হিদায়াঃ ফাজেল ক্লাসের পাঠ্য, ভূমিকা পৃঃ ৬, আরাফাত পাবলিকেশন্স ।গ্রন্থখানি কওমী মাদ্রাসা ও উঁচু শ্রেণীতে পড়ানো হয় ।
গ্রন্থকার পরিচিতি : হিদায়ার লেখক কোন হাদিশবিদ ছিলেন না ।ফলে তিনি জাল ,যঈফ সকল শ্রেণীর হাদিশ নির্বিচারে দলিল হিসাবে পেশ করেছেন ।
তিনি ৫১১ হিজরিতে তুর্কি আঞ্চলের কারাগার নামক প্রদেশের মুরগিনান নামক শহরে জন্মগ্রহন করেন।
তিনি সমরকন্দ (তুর্কিঅঞ্চলের)নামক শহরে ৫৯৩ হিজরিতে মৃত্যুবরন করেন ।
ঐ শহরে মুসলিমদের ,খৃষ্টানদের ,ইহুদীদের কবরস্থানের নাম ছিল আলাদা আলাদা । ঐ আঞ্চলের মুসলিমরা কেবল মাত্র কোরআন ও হাদিশ মানে চলতেন ,কোন মাঝাব কেও মানত না । কবর স্থানের নাম গুলি হল ,
মুসলিম _ মুহাম্মাদী
খৃষ্টান _ঈসায়ী
ইহুদী _ইহুদী
হিদায়ার লেখক মারা যাবার পর মুহাম্মাদী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে দাফন করতে বাঁধা দেওয়া হয় ।তখন লেখকের ভক্তগন অন্যত্র দাফন করেন ।
হিদায়া -ইমাম আবু হানিফার মৃত্যুর (৫৯৩-১৫০)=৪৪৩ বত্সর পর (মৃত্যুর বছরকে লেখার বত্সর ধরা হয়েছে) লেখা হয়েছে ।
হিদায়ার লিখক ইমাম আবু হানিফার মূত্যুর (৫১১-১৫০)=৩৬১ বছর পর জন্ম নিয়ে কিভাবে ইমাম আবু হানিফার মতামত অবগত হলেন তার কোন সূত্রই বলেন নাই হিদায়াতে ।
অতএব সূত্রবিহীন কারো কোন কথা মান্য করা ইসলামে জায়েয নাই ।(সহিহ মুসলিম ১ম খন্ড) ।
[উপরোক্ত বিষয় লিখার মদ্ধ্য ভূল থাকলে আমাকে জানাবেন ।]
লেবেলসমূহ:
দেওবন্দী,
নাস্তিক,
মাযহাব,
মাযহাবী কিতাব,
লা মাযহাবী,
সুফিবাদ,
হানাফি
কাঠমোল্লারা মাযহাবকে ফরজ বা ওয়াজিব করে কি ভাবে
তথাকথিত কাঠমোল্লা অরুফে
মাওলানারা চার
মাযহাব ফরজ বা ওয়াজিব
বানায় কুরআনের
আয়াতের অপব্যাখ্যা
দিয়ে।
আফসোস.....
প্রচলিত
চার মাযহাব
প্রতিষ্ঠিত হলো
রাসূল সা: এর মৃত্যুর
কয়েকশ বছর পর,
অথচ ফরজ বা ওয়াজিব
হওয়ার দলিল দিচ্ছে
কুরআন ও হাদীস
দিয়ে!! সত্যিই
বিশ্ময়কর!!
স্মৃতি থেকে লিখলাম ১
$% স্মৃতি থেকে লিখলাম ১ %$
আমি হানাফি পরিবেশে বড় হয়েছি ।সেই পরিবেশে অনেক নিয়ম কুরআন ও হাদিস মানে না।
এই হানাফি সমাজে বছরে একবার নামাজ পড়লে মুসলিম থাকে আর হাদিস এর বিপরীত।আমি নিজেও মাঝে মাঝে সালাত পড়তাম ঈদের সালাত পড়তাম না। এমনো মনে আছে মাস দুই তিন সালাতে ধারেও যেতাম না ॥
হানাফি কাটমোল্লার আমাকে শিখেছে নির্দিষ্ট ১৩০ ফরজ ,এই ১৩০ ফরজ কোন নবীর উপর নাজিল হইয়াছে আল্লাহ ভাল জানেন ।
হানাফি সমাজে চার মাযহাব চার ফরজ এটা কাঠ মোল্লার আমায় ছোট্ট বেলায় শিক্ষা দিয়েছে।
আবার এটাও শিক্ষা দিয়েছে চার কুরসী চার ফরজ।
নবী না হলে কিছু হত না।
আল্লাহ হিন্দুদের মূর্তিতেও বিরাজ মান, আরো অনেক কিছু ভাই॥॥
আরো এরা, হানাফিরা অন্য মাযহাবীদের বিরুদ্ধবাদী বলে আখ্যা দেয় ।
হানাফিরা বলে ওরা ছাড়া সব ভন্ড।
এরা কবর পূজা পীর পূজা দেওবন পূজা কারী।
দেওবন বলে নবীর নির্দেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে ।
এরা আব্রাহাম লিংকনের কুফরী মতবাদী বিশ্বাসী ।
এরা আসলে আব্রাহাম লিংকনে উম্মত।
এই সমাজের নাস্তিকবাদের উত্পত্তি এই হানাপি থেকে। দেশের বড় বড় নাস্তিক সব হানাফি ছিল, আর কি বলব।এরা নাস্তিকবাদী সরকারে মুরিদ সরকারে একটু বিরুদ্ধে বলে জেলে পাঠায় কিন্তু আল্লাহ ও মুহাম্মাদ সাঃ কে নিয়ে নাস্তিকরা যা ইচ্ছা তাই করছে আর বলে ওদের খুজে পাওয়া যায় না
শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০১৬
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১১নামার খন্ড, মনছুর হাল্লাজের জিবনী
(আল-বিদায়া ওয়ান
নিহায়া ১১নামার খন্ড,
মনছুর হাল্লাজের
জিবনী।)
ﻭﻧﺤﻦ ﻧﻌﻮﺫ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﻧﻘﻮﻝ
ﻋﻠﻴﻪ ﻣﺎ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻗﺎﻟﻪ ﺃﻭ
ﻧﺘﺤﻤﻞ ﻋﻠﻴﻪ ﻓﻲ ﺃﻗﻮﺍﻟﻪ
ﻭﺃﻓﻌﺎﻟﻪ
আমরা আল্লাহ
তায়ালার নিকট আশ্রয়
প্রার্থনা করছি’
কারো বিরুদ্ধে এমন
মতবাদ বা এমন কাজের
কথা বলতে যা তার
মধ্যে নাই
বা যা সে করে নাই।
নাম; হুসাইন
ইবনে মানছুর
ইবনে মাহমী আল-
হাল্লাজ আবু মুগীছ।
এবং তাকে আব্দুল্লাহ ও
বলা হত। তার দাদা ছিল
অগ্নি পূজক। তার
(দাদার) নাম ছিল
মাহমী। সে ছিল
পারস্যের বাইযা শহরের
অধিবাসী।
মানছুর হাল্লাজ
প্রথমে বাগদাদে আসে।
আর মক্কায় বার বার
আসা যাওয়া করত।
প্রচন্ড ঠান্ডা ও গরমের
সময়েও
সে মসজিদে হারামে খোলা আকাশের
নীচে বসে থকত।
সারা বৎসর
ব্যাপী সে নাস্তার সময়
কিছু রুটি খেত ও
পানি পান করত।
সে জাবালে আবি-
ক্বুবাইসে প্রচন্ড গরম
পাথরের উপর
বসে থাকত। সে সূফী স
¤্রাটদের সংশ্রব গ্রহন
করেছিল। যেমন;
জুনাইদ ইবনে মুহাম্মদ,
আমর ইবনে উসমান
মাক্কী, আবুল হুসাইন
নুরী।
খতীব বাগদাদী বলেন,
সুফিরা মানছুর
হাল্লাজের
ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন
মত পোষণ করেছে।
সুফিদের অধিকাংশই
হাল্লাজকে তাদের
দলভুক্ত মনে করত না।
এবং তারা অসম্মত ছিল
হাল্লাজকে তাদের
মধ্যে গণণা করতে। কিছু
সূফী হাল্লজকে তাদের
অর্ন্তভূক্ত মনে করত।
যেমন; আবুল আব্বাস
ইবনে আতা বাগদাদী,
মুহাম্মদ ইবনে খাফিফ
সিরাজী, ইব্রাহিম
ইবনে মুহাম্মদ
নাছরাবাজী নাইছাবোরী।
তারা মানছুর হাল্লাজের
অবস্থা গুলোকে ছহীহ
বলে প্রচার করত ও তার
কথাগুলো লিখে রাখত।
এমন কি ইবনে খাফিফ
বলত; হাল্লাজ
হচ্ছে আলেমে রব্বানী।
আবু আব্দুর রহমান
আস-সালামী বলেন;
(তার নাম
হচ্ছে মুহাম্মদ
ইবনে হুসাইন)
আমি ইব্রাহিম
ইবনে মুহাম্মদ
নাছরাবাজীকে বলতে শুনেছি;
কেউ হাল্লাজকে কোন
কারণে তিরষ্কার
করছিল,তখন
সে বললঃ যাকে তোমরা নিন্দা করছ
প্রকৃতপক্ষে নবী ও
সিদ্দীক্বীনদের
পরে যদি কোন মুয়াহ্হীদ
থেকে থাকে তাহলে সে হচ্ছে হাল্লাজ।
আবু আব্দুর রহমান
বলেন আমি মনছুর
ইবনে আব্দুল্লাহকে বলতে শুনেছি,
আমি শিবলীকে বলতে শুনেছি;
সে বলত
আমি এবং হাল্লাজ
একই। তবে হাল্লাজ
হচ্ছে প্রকাশ্যে আমি হচ্ছি গোপনে।
এবং তার থেকে ভিন্ন
আরেকটি বর্ণনা আছে তা হল;
সে যখন
হাল্লাজকে শুলিবিদ্ধ
অবস্থায় দেখল তখন
সে বলল,
আমি তোমাকে পৃথিবী থেকে নিষেধ
করি নাই।
খতিব বাগদাদী বলেন;
যারা হাল্লাজকে সূফীদের
অর্ন্তভূক্ত মনে করত
না তারা হাল্লাজকে সম্পৃক্ত
করত ধোকাবাজদের
সাথে।
এবং তারা মনে করত
সে হচ্ছে একজন
যিন্দিক। আর হাল্লাজ
ছিল মিষ্ট
ভাষী এবং সূফী তরীকার
উপর তার অনেক
কবিতা রয়েছে।
খতিব বাগদাদী বলেন,
হাল্লাজের কতল
পর্যন্ত তার বিষয়
নিয়ে মানুষের
মধ্যে মতবিরোধ ছিল।
অথচ ফোকাহায়ে কেরাম
এর ইজমার উপর
ভিত্তি করেই
তাকে কতল
করা হয়েছে। সে ছিল
একজন কাফির,
যিন্দিক ও ধোঁকাবাজ।
আর সূফীদের অধিকাংশ
এই মতই পোষণ করতেন।
মানছুর হাল্লাজের
বাহ্যিকতা ছুফিদের
ধোকায় ফেলেছে।
তারা তার অদৃশ্যের
ব্যাপারে জানত না।
কারণ; প্রথমে সে খুব
ইবাদত করত;
এবং সূলূকের
লাইনে চলত। কিন্তু
সে ছিল মূর্খ। তার
কাজের কোন
ভিত্তি ছিল না। তার
বাহ্যিক অবস্থা ছিল
তাকওয়ার উপর।
এজন্যই সে ভালর
চেয়ে খারাপটাই
বেশী করত। সুফিয়ান
ইবনে উয়াইনা বলেন-
ﻣﻦ ﻓﺴﺪ ﻣﻦ ﻋﻠﻤﺎﺀﻧﺎ :ﻛﺎﻥ
ﻓﻴﻪ ﺷﺒﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻴﻬﻮﺩ: ﻣﻦ ﻓﺴﺪ
ﻣﻦ ﻋﺒﺎﺩﻧﺎ: ﻛﺎﻥ ﻓﻴﻪ ﺷﺒﻪ ﻣﻦ
ﺍﻟﻨﺼﺎﺭﻱ .
অথ্যাৎ, “আমাদের
আলেমদের মধ্য
থেকে যে ভ্রান্ত
হয়ে যায় তার
মাঝে ইয়াহুদীদের
সাদৃশ্য পাওয়া যায়। আর
আবেদগণের মধ্য
থেকে যে ভ্রান্ত
হয়ে যায় তার
মাঝে খৃষ্টানদের সাদৃশ্য
পাওয়া যায়।”
আর এজন্যই
হাল্লাজের
মধ্যে হুলোলের (বান্দার
মাঝে আল্লাহ্
তা’আলার মিশ্রণ হওয়া)
আক্বিদাহ প্রবেশ
করেছিল।
মানছুর হাল্লাজ
বিভিন্ন
শহরে আসা যাওয়া করত
এবং সে মানুষের
সামনে নিজেকে একজন
দায়ী হিসাবে প্রকাশ
করত। এবং ছহীহ
ভাবে প্রমাণিত
আছে সে হিন্দুস্থানে এসেছিল
এবং যাদু শিখিয়েছিল।
এবং সে বলত আমি এর
(যাদু)
মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর
দিকে আহ্বান করি।
হিন্দুস্থানের
লোকেরা তাকে মুগীছ
(সাহায্যকারী)
বলে ডাকত।
ছুরকিছানের
লোকেরা তাকে মুক্বীদ
(খাদ্য দানকারী)
বলে ডাকত। খুরাসান
বাসীরা তাকে মুমাইয়িয
(পার্থক্যকারী)
বলে ডাকত।
পারস্যবাসীরা তাকে আবু
আব্দিল্লাহ যাহেদ
বলে ডাকত। খুজেসতান
বাসীরা তাকে আবু
আব্দিল্লাহ যাহেদ
হাল্লাজ আল-আসরার
বলে ডাকত। আর বাগদাদ
বাসীরা তাকে মুসতালাম
বলে ডাকত। আর
বসরাবাসীরা তাকে মুহাইয়ির
বলে ডাকত।
মানছুরকে হাল্লাজ নাম
করণের কারণ হচ্ছে,
সে মানুষের গোপন বিষয়
প্রকাশ করত। কেউ
বলেন হাল্লাজ একবার
কোন এক
ব্যক্তিকে বলল,
তুমি আমার অমুক
কাজগুলো করে দাও।
অতপর ঐ ব্যক্তি বলল
আমি তুলার বীজ বাছাই
করতে ব্যাস্ত আছি।
তখন মানছুর হাল্লাজ ঐ
ব্যক্তিকে বলল, যাও
আমি তোমার কাজ
করে দিচ্ছি। ঐ
লোকটি দ্রুত কাজ
সমাপ্ত করে এসে দেখল
মনছুর হাল্লাজ
তুলা থেকে বীজ
আলাদা করে বাছাই
করে রেখেছে। বলা হয়
হাল্লাজ সুরমার
কাঠি দিয়ে ইশারা করলে তুলার
বীজ আলাদা হয়ে যেত।
(ইবনে কাছীর রহঃ)
বলেন শয়তান তার
সাথীদেরকে এ জাতীয়
কাজে সাহায্য
করে এবং তাদের
মাধ্যমে কাজ নেয়। আর
সে হুলোলের
বিশ্বাসী ছিল যা তার
কবিতা থেকে বুঝে আসে।
ﺟﺒﻠﺖ ﺭﻭﺣﻚ ﻓﻲ ﺭﻭﺣﻲ ﻛﻤﺎ ...
ﻳﺠﺒﻞ ﺍﻟﻌﻨﺒﺮ ﺑﺎﻟﻤﺴﻚ ﺍﻟﻔﻨﻖ ...
ﻓﺈﺫﺍ ﻣﺴﻚ ﺷﻲﺀ ﻣﺴﻨﻲ ...
ﻭﺇﺫﺍ ﺃﻧﺖ ﺃﻧﺎ ﻻ ﻧﻔﺘﺮﻕ
১. তোমার রুহ আমার
রুহে এমন ভাবে প্রবেশ
করেছে,
যেমনিভাবে মৃগনাভীর
সাথে কোমল পানির
মিশ্রণ হয়।
সুতরাং যখন কোন
জিনিস তোমাকে স্পর্শ
করে তা যেন আমাকেই
স্পর্শ করে। অতএব
তুমিই আমি, আমাদের
মাঝে কোন পৃথকতা নেই।
ﻭﻗﻮﻟﻪ ... ﻣﺰﺟﺖ ﺭﻭﺣﻚ ﻓﻲ
ﺭﻭﺣﻲ ﻛﻤﺎ ... ﺗﻤﺰﺝ ﺍﻟﺨﻤﺮﺓ
ﺑﺎﻟﻤﺎﺀ ﺍﻟﺰﻻﻝ ... ﻓﺈﺫﺍ ﻣﺴﻚ
ﺷﻲﺀ ﻣﺴﻨﻲ ... ﻓﺈﺫﺍ ﺃﻧﺖ ﺃﻧﺎ
ﻓﻲ ﻛﻞ ﺣﺎﻝ
২. তোমার রুহ আমার
রুহের সাথে এমন
ভাবে মিশ্রণ
ঘটেছে যেভাবে পানির
মিশ্রণ ঘটে রঙ্গের
সাথে। সুতরাং যখন কোন
জিনিস তোমাকে স্পর্শ
করে তা যেন আমাকেই
স্পর্শ করে। অতএব
সর্ব অবস্থায় তুমিই
আমি, এবং আমিই তুমি ।
ﻭﻗﻮﻟﻪ ﺃﻳﻀﺎ ... ﻗﺪ ﺗﺤﻘﻘﺘﻚ
ﻓﻲ ﺳﺮ ... ﻱ ﻓﺨﺎﻃﺒﻚ
ﻟﺴﺎﻧﻲ ... ﻓﺎﺟﺘﻤﻌﻨﺎ ﻟﻤﻌﺎﻥ ...
ﻭﺍﻓﺘﺮﻗﻨﺎ ﻟﻤﻌﺎﻥ ... ﺇﻥ ﻳﻜﻦ
ﻏﻴﺒﺘﻚ ﺍﻟﺘﻌﻈﻲ ... ﻡ ﻋﻦ ﻟﺤﻆ
ﺍﻟﻌﻴﺎﻥ ... ﻓﻠﻘﺪ ﺻﻴﺮﻙ ﺍﻟﻮﺝ ...
ﺩ ﻣﻦ ﺍﻷﺣﺸﺎﺀ ﺩﺍﻥ৩. নিঃসন্দেহে আমিই
তুমি , সুতরাং তোমার
পবিত্রতা ঘোষণা করা মানেই
হচ্ছে আমার
পবিত্রতা ঘোষণা করা।
এবং তোমার একাত্ব
মানেই হচ্ছে আমার
একাত্ব, এবং তোমার
অবাধ্যতা মানেই
হচ্ছে আমার অবাধ্যতা।
ﻭﻗﺪ ﺃﻧﺸﺪ ﻻﺑﻦ ﻋﻄﺎﺀ ﻗﻮﻝ
ﺍﻟﺤﻼﺝ ... ﺃﺭﻳﺪﻙ ﻻ ﺃﺭﻳﺪﻙ
ﻟﻠﺜﻮﺍﺏ ... ﻭﻟﻜﻨﻲ ﺃﺭﻳﺪﻙ
ﻟﻠﻌﻘﺎﺏ ... ﻭﻛﻞ ﻣﺂﺭﺑﻲ ﻗﺪ ﻧﻠﺖ
ﻣﻨﻬﺎ ... ﺳﻮﻯ ﻣﻠﺬﻭﺫ ﻭﺟﺪﻱ
ﺑﺎﻟﻌﺬﺍﺏ ...
ﻓﻘﺎﻝ ﺑﺎﻧﻦ ﻋﻄﺎﺀ ﻗﺎﻝ ﻫﺬﺍ ﻣﺎ
ﺗﺰﺍﻳﺪ ﺑﻪ ﻋﺬﺍﺏ ﺍﻟﺸﻐﻒ ﻭﻫﻴﺎﻡ
ﺍﻟﻜﻠﻒ ﻭﺍﺣﺘﺮﺍﻕ ﺍﻷﺳﻒ ﻓﺈﺫﺍ
ﺻﻔﺎ ﻭﻭﻓﺎ ﻋﻼ ﺇﻟﻰ ﻣﺸﺮﺏ
ﻋﺬﺏ ﻭﻫﺎﻃﻞ ﻣﻦ ﺍﻟﺤﻖ ﺩﺍﺋﻢ
ﺳﻜﺐ ﻭﻗﺪ ﺃﻧﺸﺪ ﻷﺑﻲ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ
ﺑﻦ ﺧﻔﻴﻒ ﻗﻮﻝ ﺍﻟﺤﻼﺝ ...
ﺳﺒﺤﺎﻥ ﻣﻦ ﺃﻇﻬﺮ ﻧﺎﺳﻮﺗﻪ ...
ﺳﺮﺳﻨﺎ ﻻﻫﻮﺗﻪ ﺍﻟﺜﺎﻗﺐ ... ﺛﻢ
ﺑﺪﺍ ﻓﻲ ﺧﻠﻘﻪ ﻇﺎﻫﺮﺍ ... ﻓﻲ
ﺻﻮﺭﺓ ﺍﻵﻛﻞ ﻭﺍﻟﺸﺎﺭﺏ ... ﺣﺘﻰ
ﻗﺎﻝ ﻋﺎﻳﻨﻪ ﺧﻠﻘﻪ ... ﻛﻠﺤﻈﺔ
ﺍﻟﺤﺎﺟﺐ ﺑﺎﻟﺤﺎﺟﺐ ...
ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺧﻔﻴﻒ ﻋﻼ ﻣﻦ
ﻳﻘﻮﻝ ﻫﺬﺍ ﻟﻌﻨﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻘﻴﻞ ﻟﻪ
ﺇﻥ ﻫﺬﺍ ﻣﻦ ﺷﻌﺮ ﺍﻟﺤﻼﺝ ﻓﻘﺎﻝ
ﻗﺪ ﻳﻜﻮﻥ ﻣﻘﻮﻻ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﻳﻨﺴﺐ
ﺇﻟﻴﻪ ﺃﻳﻀﺎ ... ﺃﻭﺷﻜﺖ ﺗﺴﺄﻝ
ﻋﻨﻲ ﻛﻴﻒ ﻛﻨﺖ ... ﻭﻣﺎ ﻻﻗﻴﺖ
ﺑﻌﺪﻙ ﻣﻦ ﻫﻢ ﻭﺣﺰﻥ ... ﻻ ﻛﻨﺖ
ﻻ ﻛﻨﺖ ﺇﻥ ﻛﻨﺖ ﺃﺩﺭﻱ ﻛﻴﻒ
ﻛﻨﺖ ... ﻭﻻ ﻻ ﻛﻨﺖ ﺃﺩﺭﻱ ﻛﻴﻒ
ﻟﻢ ﺃﻛﻦ ...
ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺧﻠﻜﺎﻥ ﻭﻳﺮﻭﻯ
ﻟﺴﻤﻨﻮﻥ ﻻ ﻟﻠﺤﻼﺝ ﻭﻣﻦ ﺷﻌﺮﻩ
ﺃﻳﻀﺎ ﻗﻮﻟﻪ ... ﻣﺘﻰ ﺳﻬﺮﺕ
ﻋﻴﻨﻲ ﻟﻐﻴﺮﻙ ﺃﻭ ﺑﻜﺖ ... ﻓﻼ
ﺃﻋﻄﻴﺖ ﻣﺎ ﺃﻣﻠﺖ ﻭﺗﻤﻨﺖ ...
ﻭﺇﻥ ﺃﺿﻤﺮﺕ ﻧﻔﺴﻲ ﺳﻮﺍﻙ
ﻓﻼ ﺯﻛﺖ ... ﺭﻳﺎﺽ ﺍﻟﻤﻨﻰ ﻣﻦ
ﻭﺟﻨﺘﻴﻚ ﻭﺟﻨﺖ ... ﻭﻣﻦ ﺷﻌﺮﻩ
ﺃﻳﻀﺎ ... ﺩﻧﻴﺎ ﺗﻐﺎﻟﻄﻨﻲ ﻛﺄﻥ ...
ﻱ ﻟﺴﺖ ﺃﻋﺮﻑ ﺣﺎﻟﻬﺎ ... ﺣﻈﺮ
ﺍﻟﻤﻠﻴﻚ ﺣﺮﺍﻣﻬﺎ ... ﻭﺃﻧﺎ
ﺃﺣﺘﻤﻴﺖ ﺣﻼﻟﻬﺎ ... ﻓﻮﺟﺪﺗﻬﺎ
ﻣﺤﺘﺎﺟﺔ ... ﻓﻮﻫﺒﺖ ﻟﺬﺗﻬﺎ ﻟﻬﺎ ...
ﻭﻗﺪ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﺤﻼﺝ ﻳﺘﻠﻮﻥ ﻓﻲ
ﻣﻼﺑﺴﻪ ﻓﺘﺎﺭﺓ ﻳﻠﺒﺲ ﻟﺒﺎﺱ
ﺍﻟﺼﻮﻓﻴﺔ ﻭﺗﺎﺭﺓ ﻳﺘﺠﺮﺩ ﻓﻲ
ﻣﻼﺑﺲ ﺯﺭﻳﺔ ﻭﺗﺎﺭﺓ ﻳﻠﺒﺲ
ﻟﺒﺎﺱ ﺍﻷﺟﻨﺎﺩ ﻭﻳﻌﺎﺷﺮ ﺃﺑﻨﺎﺀ
ﺍﻷﻏﻨﻴﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﻠﻮﻙ ﻭﺍﻷﺟﻨﺎﺩ
ﻭﻗﺪ ﺭﺁﻩ ﺑﻌﺾ ﺃﺻﺤﺎﺑﻪ ﻓﻲ
ﺛﻴﺎﺏ ﺭﺛﺔ ﻭﺑﻴﺪﻩ ﺭﻛﻮﺓ
ﻭﻋﻜﺎﺯﺓ ﻭﻫﻮ ﺳﺎﺋﺢ ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ
ﻣﺎ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺤﺎﻟﺔ ﻳﺎ ﺣﻼﺝ ﻓﺄﻧﺸﺄ
ﻳﻘﻮﻝ ... ﻟﺌﻢ ﺃﻣﺴﻴﺖ ﻓﻲ
ﺛﻮﺑﻲ ﻋﺪﻳﻢ ... ﻟﻘﺪ ﺑﻠﻴﺎ ﻋﻠﻰ
ﺣﺮ ﻛﺮﻳﻢ ... ﻓﻼ ﻳﻐﺮﺭﻙ ﺃﻥ
ﺃﺑﺼﺮﺕ ﺣﺎﻻ ... ﻣﻐﻴﺮﺓ ﻋﻦ
ﺍﻟﺤﺎﻝ ﺍﻟﻘﺪﻳﻢ ... ﻓﻠﻲ ﻧﻔﺲ
ﺳﺘﺘﻠﻒ ﺃﻭ ﺳﺘﺮﻗﻰ ... ﻟﻌﻤﺮﻙ
ﺑﻲ ﺇﻟﻰ ﺃﻣﺮ ﺟﺴﻴﻢ ... ﻭﻣﻦ
ﻣﺴﺘﺠﺎﺩ ﻛﻼﻣﻪ ﻭﻗﺪ ﺳﺄﻟﻪ
ﺭﺟﻞ ﺃﻥ ﻳﻮﺻﻴﻪ ﺑﺸﻲﺀ ﻳﻨﻔﻌﻪ
ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻪ ﻓﻘﺎﻝ ﻋﻠﻴﻚ ﻧﻔﺴﻚ ﺇﻥ
ﻟﻢ ﺗﺸﻐﻠﻬﺎ ﺑﺎﻟﺤﻠﻖ ﻭﺇﻵ
ﺷﻐﻠﺘﻚ ﻋﻦ ﺍﻟﺤﻖ ﻭﻗﺎﻝ ﻟﻪ
ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻋﻈﻨﻲ ﻓﻘﺎﻝ ﻛﻦ ﻣﻊ
ﺍﻟﺤﻖ ﺑﺤﻜﻢ ﻣﺎ ﺃﻭﺟﺐ
(ইমাম ইবনে কাছীর
(রহঃ) বলেন), হাল্লাজ
শেষে স্থির
থাকতে পারেনি ।
এবং সে ভুলে পতিত
হয়েছে এবং সে বক্রপথ
অবলম্বন
করেছে,গোমরাহী ও
বিদআতে লিপ্ত হয়েছে।
আমরা আল্লাহর
কাছে এর থেকে পানাহ
চাই।
আবু আবদুর রহমান
সালামী আমর
ইবনে উসমান
মাক্কী থেকে বর্নণা করেন,
তিনি বলেন,
আমি হাল্লাজের
সাথে মক্কার কিছু
জায়গায় হাটছিলাম ও
কোরআন তিলাওয়াত
করছিলাম হাল্লাজ
আমার তিলাওয়াত
শুনে বলল কোরআনের
মত আমিও বলতে পারি।
অতপর আমি তার
থেকে পৃথক হয়ে গেলাম।
খতীব বাগদাদী বলেন
মাসউদ ইবনে নাসের
বর্র্নণা করেন,
ইবনে বাকু
সিরাজী থেকে বর্ননা করেন,
আমি আবু যুর’আ
তাবারী থেকে শুনেছি তিনি বলেন,
মানুষ এর মধ্যে কেউ
হাল্লাজকে গ্রহন
করেছে আবার কেউ
প্রত্যাখান করেছে।
মুহাম্মাদ
ইবনে ইয়াহ্ইয়া রাজী বলেন,
আমি শুনেছি আমর
ইবনে ওসমান
হাল্লাজকে লানাত
করেছে এবং সে বলত
আমার
শক্তি থাকলে হাল্লাজ
কে আমি নিজ
হাতে হত্যা করতাম।
আমি তাকে বললাম
হাল্লাজকে কিসের
উপর পেয়েছ? সে বলল
আমি কোআনের আয়াত
তিলাওয়াত করলাম,
তখন সে বলল,
আমি ক্ষমতা রাখি এমন
কোরআন
লিখতে এবং বলতে। আবু
যুর’আ তাবারী বলেন
আমি আবু ইয়াকুব
আকতাহ্
কে বলতে শুনেছি,
সে বলল আমি আমার
মেয়েকে বিবাহ দিলাম,
যখন সুলুকের
লাইনে হাল্লাজের
সুন্দর পদ্ধতি ও প্রচন্ড
চেষ্টা দেখলাম। তার
কিছুদিন পরে আমার
কাছে বিকশিত হল
যে সে হল একজন
যাদুকর ও ধোঁকাবাজ
ভেল্কীবাজ ও কাফের।
ইমাম ইবনে কাসীর
বলেন, এই বিবাহ
মক্কায় হয়েছিল।
মেয়ের নাম ছিল উম্মুল
হুসাইন বিনতে আবু
ইয়াকুব আক্তা।
মেয়েটির
ঘরে একটি সন্তান
হয়ে ছিল যার নাম
আহমদ ইবনে হুসাইন
ইবনে মানসুর। আহমদ
(হাল্লাজের পুত্র) তার
বাবার জীবনিতে ঐ
কথাগুলোই উল্লেখ
করেছেন যেগুলো খতীব
বাগদাদী বলেছেন।
আবুল কাসেম
কুশায়রী তার রেসালায়
উল্লেখ করেছেন হেফজ
কুলুবুল মাশায়েখ
অধ্যায়ে যে, আমর
ইবনে ওসমান মক্কায়
হাল্লাজের নিকট
গিয়েছিল। তখন
সে একটি পাতায় কিছু
লিখছিল।
তাকে জিজ্ঞেস
করা হল, এটা কি?
সে বলল,
“ইহা কেরআনের
বিপরীত লিখা হচ্ছে।”
কুশায়রী বলেন অতপর
হাল্লাজের জন্য বদ
দু’আ করা হল। এরপর
সে আর সফল
হতে পারেনি। আর
ইয়াকুব
আক্তা হাল্লাজের
সাথে তার মেয়ের
বিবাহের
ব্যপারটি অস্বীকার
করল । আমর
ইবনে ওসমান
চিঠি লিখে বিভিন্ন
প্রান্তে পাঠিয়ে দিল
যাতে মানুষদেরকে হাল্লাজের
ব্যাপারে সতর্ক
করা হয়েছে। অতপর
হাল্লাজ বিভ্রান্ত
অবস্থায়
শহরে ঘুরতে লাগল। আর
লোকদের
সামনে নিজেকে আল্লাহর
দিকে আহবানকারী হিসাবে প্রকাশ
করত। আর
এতে বিভিন্ন ভেল্কির
সাহায্য নিত। এভাবেই
সে চলতে ছিল।
এমনকি আল্লাহ্
তা’আলা তার এই
অনিষ্ঠতা থেকে রক্ষা করল
শরীয়াতের ফায়সালায়
তাকে হত্যা করে।
যে ফায়সালা জিন্দিক
ছাড়া অন্য কারো উপর
হয় না। আর হাল্লাজ
কোরআনের উপর
আক্রমন করেছিল।
আর
সে তা করতে চেয়েছিল
হারাম শরীফে অথচ
আল্লাহ
তা’আলা জিব্রাইলের
মাধ্যমে নাযিল
করেছেন, ﻭَﻣَﻦْ ﻳُﺮِﺩْ ﻓِﻴﻪِ
ﺑِﺈِﻟْﺤَﺎﺩٍ ﺑِﻈُﻠْﻢٍ ﻧُﺬِﻗْﻪُ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏٍ
ﺃَﻟِﻴﻢٍ
এখানে (মসজিদে হারামে)
যে-ই
সততা থেকে দূরে গিয়ে জুলুমের
পথ অবলম্বন
করবে তাকেই
আমি যন্ত্রনাাদায়ক
আযাবের স্বাদ
আস্বাদন করাব। (সূরা:
হজ্ব ২০)
হাল্লাজের এই কাজের
আর কি কাজ এমন
হতে পারে যা সত্য
থেকে দূরে সরায় তার
কাজগুলি মক্কার
কাফের কুরাইশদের
কাজের সাথে সদৃশ্য
রাখে। যেমনটা আল্লাহ
বলেছেন,
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺗُﺘْﻠَﻰ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺁﻳَﺎﺗُﻨَﺎ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ
ﻗَﺪْ ﺳَﻤِﻌْﻨَﺎ ﻟَﻮْ ﻧَﺸَﺎﺀُ ﻟَﻘُﻠْﻨَﺎ ﻣِﺜْﻞَ
ﻫَﺬَﺍ ﺇِﻥْ ﻫَﺬَﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﺳَﺎﻃِﻴﺮُ
ﺍﻟْﺄَﻭَّﻟِﻴﻦَ
যখন তাদের
সামনে আয়াত
তিলাওয়াত করা হয়
তখন
তারা বলে আমরা তা শুনলাম,
আমরা যদি চাই
তাহলে এই কোআনের
মত আমরাও কিছু
বলতে পারি। এতো সেই
সব
পুরনো কাহিনী যা আগে থেকে লোকেরা বলে আসছে (সূরা:
আনফাল, ৩১)
(ﺃﺷﻴﺎﺀ ﻣﻦ ﺣﻴﻞ ﺍﻟﺤﻼﺝ)
হাল্লাজের
ভেল্কিবাজী
(হাল্লাজের কিছু
ভেল্কিবাজী): খতীব
বাগদাদী রহ:
বর্ননা করেন, হাল্লাজ
তার সহযোগীদের মধ্য
থেকে বিশেষ
একজনকে নির্দেশ দিল
পাহাড়ি এলাকার
বাহিরে যেতে।। আর
সেখানে গিয়ে প্রথমে বেশী বেশী ইবাদাত
ও দুনিয়া বিমুখতা যেন
প্রকাশ করে। কারন
মানুষ যখন তার ইবাদত
দেখবে তাকে তারা গ্রহন
করে নিবে ও বিশ্বাস
করে নিবে যে এই
লোকটা খুবই ভাল। এই
অবস্থা তৈরী হলে সে যেন
প্রকাশ
করে যে সে অন্ধ
হয়ে গিয়েছে।
লোকেরা তার
চিকিৎসা করতে চেষ্টা করলে যেন
তাদের
বলে হে কল্যানের
জামাত, তোমাদের এই
চেষ্টার কোন
ফায়দা হবেনা। এর
কিছুদিন পর যেন
প্রকাশ
করে যে সে রাসূল (সাঃ)
কে স্বপ্নে দেখেছে।
এবং রাসূল (সাঃ)
তাকে বলেছে কতুবের
সাহায্য
ছাড়া তুমি সুস্থ্য
হবে না। অচিরেই কুতুব
সাহেব তোমার
কাছে আসবে অমুক
মাসের এই দিনে। তার
গুণসমূহ হবে এমন এমন।
হাল্লাজ তাকে বলল ঐ
সময় আমি তোমার
কাছে আসব। অতপর
লোকটি ঐ
শহরে চলে গেল
এবং অনেক ইবাদত
করে নিজেকে প্রকাশ
করল ও কোরআন পাঠ
করত। কিছুদিন
এভাবেই থাকল।
লোকেরা তাকে পছন্দ
করল এবং অনেক
ভালবাসল। হঠাৎ
একদিন সে প্রকাশ
করল যে সে অন্ধ
হয়ে গিয়েছে। কিছু সময়
এ অবস্থায় থাকার পর
সে প্রকাশ করল
যে আমি পঙ্গু
হয়ে গিয়েছি। তখন ঐ
এলাকার
লোকেরা তাকে সবধরনের
চিকিৎসা করাল। কিন্তু
এতে কোন ফল
পাওয়া গেলনা। তখন
সে লোকদের
ডেকে বলল,
ওহে কল্যানের জামাত
তোমরা যা করছ
এতে আমি সুস্থ্য
হবনা কারন
আমি স্বপ্নে দেখেছি রাসূল
(সাঃ) আমাকে ঘুমের
ঘরে বলছেন তোমার
সুস্থতা অমুক কুতুবের
হাতে। অচিরেই
সে তোমার
কাছে আসবে। তখন
লোকেরা তাকে প্রথমে মসজিদে না নিয়ে অন্য
জায়গায় নিয়ে গেল।
কিন্তু
পরে তাকে অনেক
সম্মান করতে শুরু করল
অতপর হাল্লাজের
বেধে দেওয়া সময়ে হাল্লাজ
এ শহরে গোপনে প্রবশ
করল। তার গায়েছিল
সাদা রংয়ের
পশমি পোষাক।
সে মসজিদে প্রবেশ
করল
এবং একটি কোনে বসে ইবাদত
করতে লাগল আর
সে কারো দিকে তাকাত
না। হল্লাজের সাথীর
বর্ণনাকৃত গুন
অনুপাতে লোকেরা তাকে চিনল।
তার সাথে মুসাফা করল,
সালাম দিল ও সম্মান
করল এবং অন্ধ
ব্যক্তিকে তা জানানো হল।
সে বলল তার
গুনগুলি বর্ণনা কর।
লোকেরা গুণ
বর্ণনা করলে সে বলল এ
তো ঐ ব্যক্তি যার
ব্যাপারে রাসূল (সাঃ)
আমকে বলেছেন যে,
তোমার সুস্থতা অমুক
কুতুবের হাতে।
সুতরাং তোমরা আমাকে ঐ
ব্যক্তির
কাছে নিয়ে চল।
লোকেরা তাকে নিয়ে গেল।
তাকে চিনল এবং বলল
হে আল্লাহর বান্দা,
রাসূল (সাঃ)
স্বপ্নে আমাকে আপনার
কথা বলেছেন।
পুরো স্বপ্নের
কথা সে বলল হাল্লাজ
তা শুনে দুহাত দুআর
জন্য উপরে উঠাল
এবং তার জন্য দু’আ
করল। তারপর তার
লালা নিয়ে অন্ধ
ব্যক্তির
চোখে লাগালে তার চোখ
এমন ভাবে ভাল হল যেন
পূর্বে তার চোখ অন্ধই
ছিলনা এমন মনে হল।
অতপর তার লালা পঙ্গু
ব্যক্তির
পায়ে লাগালে সাথে সাথে সে ভাল
হয়ে হাটতে লাগল যেন
ইতপূর্বে তার কোন
রোগই ছিল না।
সেখানে ঐ এলাকার লোক
সকল ও এলাকার আমীর
উপস্থিত ছিল তখন
লোকেরা জোরে চিৎকার
করে উঠল এবং তাকবির
দিয়ে প্রকম্পন
সৃষ্টি করল
এবং তাসবিহ পাঠ করল।
আর
লোকেরা হাল্লাজকে অনেক
অনেক সম্মান
করতে লাগল। এ এলাকার
লোকেরা হাল্লাজকে এত
বেশী ভালবেসে ফেলল
যে, সে যা চাইত
তা তারা দিয়ে দিতে প্রস্তুত
হয়ে গেল। হাল্লাজ ঐ
এলাকা থেকে চলে যাওয়ার
ইচ্ছে করল। তখন
লোকেরা তাকে অনেক
মাল
জমা করে দিতে চাইলে সে বলল,
আমি এই এলাকায়
পৌছেছি দুনিয়াকে পরিত্যাগের
মাধ্যমে। সুতরাং আমার
ধন সম্পদের প্রয়োজন
নেই তবে তোমাদের ঐ
সাথীর প্রয়োজন
থাকতে পারে কেননা তার
অনেক অবদাল
সাথী রয়েছে যারা জিহাদ
করে হজ্ব
করে এবং সদকা করে।
তখন ঐ অন্ধ
ব্যক্তি (হাল্লাজের
সাথী) বলল হা’ আমাদের
শাইখ সত্য বলেছেন
যার মাধ্যমে আল্লাহ
আমায়
দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছে।
সুতরাং আমি বাকী জীবন
জিহাদে কাটাব
এবং বাইতুল্লায় আমার
আবদাল সাথীদের
সাথে হজ্বের মাধ্যমে ,
অতপর হাল্লাজ
লোকদের কে উদ্ধুদ্ধ
করলেন তার
সাথীকে মালা দিতে।
অতপর হাল্লাজ ঐ স্থান
ছেড়ে চলে গেল। আর ঐ
লোক কিছুদিন লোকদের
মাঝে থেকে অনেক
সম্পদ একত্রিত
করে হাল্লাজের
কাছে চলে আসল
এবং দুজন
এগুলোকে বন্টন
করে নিয়েছিল।
আব্দুর রহমান
সালামী বলেন
আমি ইব্রাহীম
ইবনে মুহাম্মদ ওয়ায়েজ
থেকে শুনেছি যে আবু
বকর ইবনে মামশাজ
বলেন দায়নুয়ে আমাদের
কাছে এক
ব্যক্তি উপস্থিত হল
যার ঘাড়ে সবসময়
একটি গাট্টি ঝুলানো থাকত।
তার
গাট্টি থেকে আমরা তালাশ
করে একটি হাল্লাজের
চিঠি পেয়েছি। যার
হেডলাইন ছিল
রাহমানুর রাহিম এর
পক্ষ থেকে(লেখা চিঠি)
অমুকের নিকট। অতপর
ঐ লোক ও চিঠিসহ
ইরাকে পাঠানো হল।
হাল্লাজকে এ
ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে সে তা স্বীকার
করল যে, এই চিঠি তার
নিজের লেখা। তখন
বাগদাদের
লোকেরা তাকে বলল
তুমি (ইতিপূর্বে)
নবী দাবী করেছিলে,
এখনতো দেখা যাচ্ছে তুমি ইলাহ
দাবি ও রব দাবি করছ!
সে বলল না, কিন্তু
আমার কাছে তো শুধু
জমাকৃত, আর
লেখকতো একমাত্র
আল্লাহই, অন্য কেউ
না।
আমিতো একটি যন্ত্রমাত্র।
তখন তাকে বলা হল
তোমার সাথে এই মতের
আর কেউ আছে কি?
তখন সে বলল
হ্যাঁ আছে ইবনে আতা এবং আবু
মুহাম্মদ হারিরিও
আবুবকর শিবলী। আবু
হারিরিকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলল
হাল্লাজের
কথা শাস্তিযোগ্য।
শিবলীকে জিজ্ঞেস
করা হলে সে বলল
যে এমন
বলবে তাকে বাধা দেওয়া হবে।
এমনকি এই চিঠিই তার
ধ্বংসের কারণ
হয়ে দাড়ায়। আবু আব্দুর
রহমান সালামী মুহাম্মদ
ইবনে আব্দুর রহমান
রাজী থেকে বর্ণনা করেন
ওজীর হামেদ আক্কাস
যখন
হাল্লাজকে উপস্থিত
করলেন তখন
হাল্লাজকে তার
আক্বীদার
ব্যপারে জিজ্ঞেস
করলে সে তার
আক্বীদার
কথা স্বীকার করেছে।
অতপর
তা লিখে ইরাকের
ফুকাহায়ে কিরামকে জিজ্ঞেস
করা হল। তখন ইরাকের
ওলামাগন
ঘোষনা করলেন
এবং তা লিখে ওজীরের
কাছে পাঠানো হল।
অতপর অজীর
ইবনে আতাকে তার
বাড়িতে ডেকে নিলেন
এবং মজলিসের
মাঝে বসিয়ে ইবনে আতাকে হাল্লাজের
আক্বীদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করলেন। তখন
ইবনে আতা বলল,
যে ব্যক্তি এমন
কথা বলে তার কোন
আক্বীদা নেই। তখন
ইবনে আতা অজীরকে বলল
তোমার কি হল? এই
ওলীদের নেতার কথায়।
তখন অজীর,
ইবনে আতার চোয়াল
কেটে ফেলার নির্দেশ
দেয় এবং তার মাথায়
আঘাত করতে নির্দেশ
দেয়
এভাবে তাকে মারতে থাকে।
তার কিছুদিন পর তার
হাত পা কেটে ফেলা হয়।
সাতদিন পর
সে মৃত্যুবরণ করে।
বাগদাদের
উলামায়ে কিরাম
হাল্লাজের কুফরির
ব্যপারে ঐক্যমত পোষন
করেছেন উল্লেখ্য যে, ঐ
সময় বাগদাদ ছিল
ইলমের কেন্দ্র।। খতীব
বাগদাদী বলেন, হাল্লাজ
শেষবারের
মতো বাগদাদে এসেছিল
এবং সূফীদের সঙ্গ
দিয়েছে। বাগদাদের
অজীর হামিদ
ইবনে আব্বাস এর
কাছে এই সংবাদ পৌছল
যে হাল্লাজ অনেক
মানুষদেরকে গোমরাহ
করছে এবং লোকদের
কাছে এটাও ছড়াচ্ছিল
যে, সে মৃতকে জীবন
দিতে পারে ।
জ্বীনরা তার খেদমত
করে এবং যে যা চায়
তা উপস্থিত করে দেয়।
এবং আলী ইবনে ঈসার
কাছে এক বক্তির নাম
আলোচনা করা হলো,
যাকে মুহাম্মদ
ইবনে আলী ইবনে কানাবী কাতেব
বলা হতো।
সে হাল্লাজের ইবাদত
করত
এবং মানুষদেরকে তার
আনুগত্যের
গিকে আহবান করত।
তখন মুহাম্মদ
ইবনে আলী কানায়ীকে গেফতার
করা হলে এ
বিষয়গুলো সে স্বীকার
করল। গ্রেফতারের সময়
কানায়ীর
বাড়ী থেকে হাল্লাজের
কিছু লেখা পাওয়া যায় ।
যেগুলো স্বর্ণপানী দ্বারা লেখাছিল
রেশম কাপড়েরর উপর
এবং সেখানে একটি থলে পাওয়া যায়।
যাতে হাল্লাজের পশ্রাব
পায়খানা এবং হাল্লাজের
রুটির কিছু অংশ ও তার
অন্যন্য জিনিসপত্র।
মুকতাদীরের পক্ষ
থেকে অজীরকে ডাকা হল
এবং হাল্লাজের
বিষয়টি তদন্ত করার
দায়িত্ব দিল। তখন
অজীর হাল্লাজের
সাথীদের
একটি জামাতকে এনে ধমকালো তখন
তারা স্বীকার করল যে,
হাল্লাজ হল আল্লাহর
সাথে আরেক ইলাহ
এবং সে মৃতকে জীবিত
করতে পারে। এভাবেই
তারা হাল্লাজকে উন্মোচন
করেছিল। তখন
আলী ইবনে ঈসা তাদেরকে প্রত্যাখান
করল
এবং মিথ্যাবাদী বলে হাল্লাজের
ব্যপারে বলল
আমি আল্লাহর
কাছে আশ্রয় চাই এমন
লোক
থেকে যে নিজেকে নবী দাবী করেছে এবং ইলাহ
ও রব দাবী করেছে।
আমি একজন সালেহ
ব্যক্তি বেশী বেশী সালাত
ও সাওম
আদায়কারী আর
শাহাদাতাইনের উপর
আমি কোন জিনিস
বৃদ্ধি করবনা এবং আলী ইবনে ঈসা পরে অনেক
বেশী বেশী আল্লাহর
কাছে ক্ষমা চাইত।
অজীর হামিদ আব্বাস
সতর্ক হওয়ার
পূর্বে তার
এখানে সকলেই প্রবেশ
করতে পারত। একজন
আসত যার নাম
কখনো বলত হুসাইন
ইবনে মানসুর আবার
কখনো বলত মুহাম্মদ
ইবনে আহমদ কায়েমী।
আর হেরেমের একজন
যার নাম ছিল নাসরাল
হাজের। সে মানসুর
হাল্লাজের ধোঁকায়
পরে গিয়েছিল।
সে ধারণা করেছিল
যে হাল্লাজ একজন
নেককার লোক। অতপর
হাল্লাজ এর
ব্যপারে খলিফা মুকতাদির
বিল্লাহ
জানতে পারলে তাকে গ্রেফতার
করে হামিদ
ইবনে আব্বাসের
কাছে হস্তান্তর
করে দেয়।
সে তাকে জেলে বন্দি করে রাখে।
অতপর সকল
ফুকাহায়ে কেরাম তার
কুফুরির ব্যাপারে ও
যিন্দিকের
ব্যপারে ফতওয়া দেয়
এবং সে একজন যাদুকর।
এই ফতোয়ার পর
হাল্লাজের সাথীদের
মধ্যে থেকে দু’জন
ফিরে এসেছিল। একজন
হল আবু আলী হারুন
ইবনে আব্দুল আজীজ
আওরাজী, আরেকজন
হল দাব্বাস।
তারা দুজনই হাল্লাজের
হটকারিতা ও
যাদুকরী ও
মানুষদেরকে মিথ্যা ও
ভেলকীবাজীর
দিকে আহবান করত
তা খুলে খুলে বলল।
হাল্লাজের এই
ধেকাবাজীকে আরও
স্পষ্ট করার জন্য
সুলাইমানের
মেয়ে (হাল্লাজের
স্ত্রী)কে উপস্থিত
করা হল। তখন
সে হাল্লাজের আরও
অনেক দোষ-ত্রুটির
কথা বলেন। সে বলল
আমি একদিন ঘুমন্ত
অবস্থায়, সে আমার
উপর বসে বলল
নামাজের জন্য উঠ।
হাল্লাজের ইচ্ছা হল
তার সাথে সহবাস
করবে এবং হাল্লাজ
তার মেয়েকে নির্দেশ
দিল যে, সে যেন
হাল্লাজকে সিজদা করে।
তখন তার
স্ত্রী তাকে বলল মানুষ
কি মানুষকে সিজদা করে?
তখন হাল্লাজ বলল
হ্যাঁ এক ইলাহ আকাশে,
আরেক ইলাহ জমীনে।
অতপর
সে তাকে নির্দেশ দিল
তার আন্ডারগ্রাউন্ড
থেকে যা সম্পদ চাই
তা নিতে সে আন্ডারগ্রাউন্ডে
গিয়ে দেখল
সেখানে অনেক দিনার
দিরহাম।
হাল্লাজকে নিয়ে সর্বশেষ
কাজী আবু ওমর
মুহাম্মদ
ইবনে ইউছুফকে উপস্থিত
করা হল
এবং হাল্লাজকে আনা হল
এবং হাল্লাজের লিখিত
একটি কিতাবও
উপস্থিত করা হল। তখন
তার
কিতাবে একটি লেখা পেল
যাতে লিখা আছে যে কোন
ব্যক্তি হজ্ব করার
ইচ্ছা করল, কিন্তু
সামর্থ নেই, তখন
সে যেন তার
বাড়ীতে একটি ছোট
গৃহনির্মান
করে যাতে কোন ধরনের
নাপাকি থাকবেনা এবং অন্য
কেউ যেন
সেখানে প্রবেশ
না করতে পারে। যখন
হজ্বের সময় হবে তখন
তিনদিন
রোজা রাখবে এবং ঐ
ঘরটার
চারপাশে তাওয়াফ
করবে,
যেভাবে কা’বাকে তাওয়াফ
করা হয়। অতপর সে যেন
হজ্বের কাজগুলো তার
ঘরে করতে থাকে।
অতপর ত্রিশজন
ইয়াতিমকে দাওয়াত
দিয়ে খাওয়াবে এবং তাদের
খেদমত
করবে এবং তাদের
সকলকে একটি করে জামা পরাবে ও
সবাইকে সাত
অথবা তিন দিরহাম
করে দেবে। হজ্বের
জন্য ইচ্ছা পোষণ
কারী এমন করলে তার
হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।
এবং যে ব্যক্তি তিনদিন
রোজা রাখবে আর
চতুর্থদিন তা ভাঙবে,
সে একমাস রমজানের
রোজা রাখার সমপরিমান
সওয়াব অর্জন করবে।
আর
যে ব্যক্তি রাত্রের শুরু
থেকে নিয়ে শেষপর্যন্ত
দুইরাকাত সালাত
(নামাজ) পড়বে। এরপর
তার সারা জীবনের
নামাজের পরিমান
সওয়াব পাবে। আর
যারা শহীদদের ও
কুরাইশদের কবরের
পাশে দশদিন থাকবে,
নামাজ পরবে ও
রোজা রাখবে, ইফতার
করবে একটি রুটি ও
লবণ দ্বারা,
তাহলে বাকী জীবনে তার
ইবাদতের জন্য যথেষ্ট
হবে। তখন কাজী আবু
উমর
হাল্লাজকে জিজ্ঞেস
করল
এগুলো তুমি কোথায়
পেয়েছ। হাল্লাজ বলল
আমি এগুলি হাসান
বসরীর ইখলাছ নামক
কিতাবে পেয়েছি। তখন
কাজী আবু উমর বলল
হাল্লাজ
তুমি মিথ্যা বলছ।
তোমার রক্ত হালাল।
আমি হাসান বসরীর
কিতাব মক্কায়
শুনেছি অথচ তাতে এই
জাতীয় কোন কিছু
লেখা নেই।
অতপর অজীর কাজীর
কাছে আসল এবং বলল
সে যে হালানুদ্দাস
তাহা কাগজে লিখেদিন।
কাজীসাহেব
তাহা লিখে দিলে অজীর
কাগজটিকে মুক্তাদির
কাছে পাঠাল। তখন
হাল্লাজ
বন্দী অবস্থায়।
মুক্তাদিরর এর
অনুমোদন দিতে তিনদিন
দেরী করল এবং অজীর
হামিদ আব্বাসের
ব্যপারে খারাপ
ধারনা করে বসল। তখন
সে খলিফার নিকট
একটি চিঠি লিখল
যে হাল্লাজের
বিষয়টি অনেক
প্রচারিত ও প্রসিদ্ধ।
তার ব্যপারে কারো কোন
দ্বিমত নেই। সে অনেক
মানুষকে গোমরাহ
করেছে। অতপর
খলিফার পক্ষ
থেকে উত্তর আসল
যে হাল্লাজকে মুহাম্মদ
ইবনে আব্দুস সনামাদ
জেলার এর
কাছে হস্তান্তর কর
এবং তাকে একহাজার
বেত্রাঘাত করতে বল,
যদি হাল্লাজ বেতের
আঘাতে মরে যায়
তাহলে ত হলই,
অন্যথায় তার গর্দান
উড়িয়ে দেবে। অজীর
খলিফার এই
নির্দেশে খুবই খুশী হল।
এবং জেলার
কে ডেকে তার
হাতে হাল্লাজকে তুলে দেওয়া হল।খতীব
বাগদাদী বলেন
আব্দুল্লাহ
ইবনে আহমদ
ইবনে উসমান সায়রাকী,
আবু ওমর
ইবনে ইয়াহ্ইয়া থেকে বর্ণনা করেন
যখন
হাল্লাজকে কতল করার
জন্য মানুষদের
সামনে বের
করা হল, তখন মানুষদের
প্রচন্ড ভীড় ছিল।
তখন
আমি হাল্লাজকে দেখে তার
নিকটে গেলাম। আর
হাল্লাজ তার সাথীদের
বলতে ছিল,আমার
কতল
হওয়াটা তোমাদেরকে যেন
চিন্তায় না ফেলে।
কারন
আমি ত্রিশদিন পর
তোমাদের
কাছে ফিরে আসব।
সে হত্যা হল। কিন্তু
ফিরে আসে নাই। খতীব
বাগদাদী বলেন, যখন
হাল্লাজকে জেলারের
কাছে হত্যার জন্য
হস্তান্তর করা হল
তখন
সে মুহাম্মদ
ইবনে আব্দুস সামাদ
কে ডেকে বলল
যে,আমার
কাছে কুসতুনতুনিয়া বিজয়
করার
একটি নসীহত আছে।
তখন সে বলল
তা বললেও তোমার
হত্যা বন্ধ করা হবেনা।
অতপর তাকে একহাজার
বেত্রাঘাত করা হল
এবং হাত পা কাটা হল ও
তার
মাথা দেহ
থেকে বিচ্ছিন্ন
করা হল। তার
দেহটাকে আগুন
দিয়ে জ্বালিয়ে দিল ও
তার
ছাইগুলোকে দজলা নদীতে ফেলে দিল।
তার
কাটা মাথাটাকে ইরাকের
ব্রীজের ওপর দুইদিন
লটকিয়ে রাখা হয়েছিল।
হাল্লাজের
সাথীরা ত্রিশ দিন
গুনতে লাগল হাল্লাজ
ফিরে আসে কিনা। কেউ
কেউ
ধারনা করল
যে তারা হাল্লাজকে ত্রিশদিন
পর দেখেছে।
সে একটি গাধার উপর
আরোহিত অবস্থায়
নাহরাওয়ানের
রাস্তায়। অতপর
সে বলল
যাতে লোকেরা এ
ধারনা না করে যে আমি হত্যা হয়েছি।
নিশ্চয় হত্যার
সময় অন্য
লোককে আমার মত
করে দেওয়া হয়েছিল।
হাল্লাজের
অনুসারীরা তা বলতেছিল
যে হাল্লাজের
দুশমনকে হত্যা করা হয়েছে।
ঐ যুগের উলামাগন বলল
তারা সত্যিই
দেখেছে শয়তান
হাল্লাজের
আকৃতি ধারণ
করে এসেছিল,
যাতে মানুষদেরকে গোমরাহ
করতে পারে।
যেরকম
ভাবে নাসারাদের
একটি দলকে গোমরাহ
করেছে।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)