রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

রাসুল সাঃ এর নিজের আমল ঈদ চাঁদ ((ঈদ পর্ব ৩য়))

রাসুল সাঃ এর নিজের আমল ঈদ চাঁদ ======= ইসলামিক ফাউন্ডেশন গ্রন্থঃ জামে তিরমিজী অধ্যায়ঃ ৮/ সাওম (রোজা) হাদিস নাম্বারঃ [৬৮৮] মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল (রঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে এসে বলল, আমি (রামাযানের) চাঁদ দেখেছি, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি একথার সাক্ষ্য দাও যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই? তুমি কি আরো সাক্ষ্য দাও যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, হে বিলাল !রাঃ লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিয়ে দাও তারা যেন আগামী কাল সিয়াম পালন করে। ==== [৬৮৯] আবূ কুরায়ব (রহঃ) সিমাক ইবনু হারব (রহঃ) সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদিসটির সনদে মতভেদ রয়েছে। সুফিয়ান সাওরী প্রমূখ এটিকে সিমাক ইবনু হারব, ইকরিমা সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মুরসালরূপে রিওয়ায়াত করেছেন। সিমাক (রহঃ) এর অধিকাংশ ছাত্র সিমাক -ইকরিমা সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। অধিকাংশ আলিমের এই হাদিস অনুসারে আমল রয়েছে। তাঁরা বলেন, সিয়ামের ব্যাপারে এক ব্যক্তির সাক্ষ্যই গ্রহণীয়। ইবনু মুবারক, শাফিঈ রঃ ও আহমাদ (রঃ) ও কহফা বাসীর ((ইমাম আবূ হানীফা (রঃ) বক্তব্য এ-ই। ইসহাক (রঃ) বলেন, দুই ব্যক্তির সাক্ষ্য ছাড়া সিয়াম পালন করা যাবেনা। তবে সিয়ম ভঙ্গের ব্যাপারে আলিমদের মধ্যে মতভেদ নেই যে, দুই ব্যক্তির সাক্ষ্য ছাড়া গ্রহণযোগ্য হবে না। ======== ইসলামিক ফাউন্ডেশন গ্রন্থঃ সুনানে নাসাঈ অধ্যায়ঃ ১৭/ সাওম (রোজা) হাদিস নাম্বারঃ ২১১৬। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে এক বেদুঈন এসে বললো যে, আমি চাঁদ দেখেছি, তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন যে, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মা’বুদ নাই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার বান্দা এবং রাসুল? সে বললো, হ্যাঁ। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোযণা দিলেন যে, তোমরা সবাই সাওম (সিয়াম/রোজা/রোযা) পালন কর। ২১১৭। মুসা ইবনু আব্দুর রহমান (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে একজন বেদূঈন এসে বললেন যে, আমি রাত্রে চাঁদ দেখেছি, তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন যে, তুমি কি সাক্ষ্য দেও যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল? সে বললো, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ হে বেলাল! তুমি লোকদের সামনে ঘোযণা করে দাও যে তারা যেন সাওম (সিয়াম/রোজা/রোযা) পালন করে। ==== রাসুল (সাঃ) এর সমাধান করে গেছেন এক জন মুসলমানের স্বাক্ষীর উপর সাওম শুরু করা যেতে পারে । হযরত ইবনে উমর (রাঃ) বলেন,লোকেরা চাঁদ দেখেছে আমি নবী করীম (সাঃ) কে বললাম,আমিও চাঁদ দেখেছি,তখন নবী (সাঃ) নিজেও সাওম রাখলেন এবং লোক জনকেও সাওম রাখার আদেশ দিলেন-(-সহিহু সুনানি আবিদাউদ ২/৫৫ হাদিস নং ২৩৪২;আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩৩৫, দারেমী) === একবার সাহাবীগণ রমজানের চাঁদ দেখা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন ।তারা তারাবিহ সলাত না পড়ার এবং পরদিন সাওম না রাখার ইচ্ছা পোষণ করেন ।এমতাবস্থায় ‘হাররা’নামক এক স্থান থেকে জনৈক বেদুইন এসে সাক্ষ্য দেয় যে,সে চাঁদ দেখেছে।তখন তাকে রসূল সা: এর দরবারে নিয়ে আসা হয় ।রসূল সা: তাকে জিজ্ঞেস করেন,তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে,আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল ?সে বলে,হ্যা আমি সাক্ষ্য দেই এবং আরও সাক্ষ্য দেই যে,আমি নতুন চাঁদ দেখেছি ।অত:পর রসূল সা: হযরত বেলাল রা: কে নির্দেশ দিলেন,লোকদেরকে জানিয়ে দেওয়ার জন্যে যাতে তারা তারাবিহ সলাত পড়ে এবং পরদিন সাওম রাখে(আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩৩৩, ২৩৩৪, তিরমিযী,নাসাঈ, ইবনে মাজাহ,দারেমী) === আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে এমন এক ব্যক্তির চাঁদ দেখাই যথেষ্ট,যার দ্বীনদার হওয়া প্রমাণিত অথবা বাহ্যিক ভাবে দ্বীনদার হিসেবে পরিচিত (সুনানে আবু দাউদ হাঃ/২৩৪০) ==== দুই জন মুসলমানের স্বাক্ষীর উপর সাওম শেষ করা যেতে পারে । “রসূল সা: আমাদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন যে, আমরা যেন শাওয়ালের চাঁদ দেখাকে ইবাদত হিসেবে গুরুত্ব দেই।আর আমরা স্বচক্ষে যদি তা না দেখি তবে দুজন ন্যায় পরায়ন লোক এ ব্যাপারে স্বাক্ষ্য প্রদান করলে তখন আমরা যেন তাদের সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করি(সূত্র: আবু দাউদ-৩য় খন্ড/২৩৩১, ২৩৩২) ==== হযরত আবু উমাইর ইবনে আনাস (রাঃ) আপন এক আনসারী চাচা থেকে বর্ণনা করেন তারা বলেছেন, মেঘের কারনে আমরা শাওয়ালের চাঁদ দেখিনি বলে সাওম রেখে ছিলাম ।পরে দিনের শেষ ভাগে একটি কাফেলা আসল । তারা নবী করিম (সঃ) এর কাছে রাত্রে চাঁদ দেখেছে বলে সাক্ষী দিল । হুজুর (সঃ) লোকজনকে সে দিনের সাওম ভেঙ্গে দেয়ার আদেশ দিলেন এবং তার পরের দিন সকলে ঈদের সলাতে আসতে বললেন(আহমাদ, নাসাঈ, ইবনে মাযাহ, সহীহু সুনানি আবি দাউদ ১/৬৮৪ হাঃ ১১৫৭) === একবার লোকেরা রমজানের শেষে শাওয়ালের চাঁদ দেখা নিয়ে মতভেদ করেন। তখন দুজন বেদুইন রসূল সা: এর কাছে হাজির হয়ে আল্লাহর কসম করে সাক্ষ্য প্রদান করেন যে,গত সন্ধ্যায় তারা শাওয়ালের চাঁদ দেখেছে ।তখন রসূল সা: লোকদেরকে সাওম ভাঙ্গার নির্দেশ দেন ।রাবী খালফ তার হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে,রসূল সা: আরও বলেন যে,লোকেরা যেন আগামীকাল ঈদগাহে আসে”(আবু দাউদ ৩য় খন্ড/২৩৩৩, ২৩৩৪) সুতরাং অধিকাংশ আলেম বলেন যে সাওম রাখার জন্য একজন দর্শক হলেই চলবে তবে সাওম ভঙ্গ করার জন্য দুইজন দর্শক প্রয়োজন ====

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন